ফরিদ উদ্দিন,লামা প্রতিনিধি: বান্দরবানের লামায় লাল সবুজের নতুন বাড়ি পেয়ে মহা খুশি মুক্তিযোদ্ধা হেলু মিয়া। দু:স্থ্য মুক্তিযোদ্ধা বসত ঘর নির্মাণ করে দিলেন সরকার। একটি ছোট্ট বাঁশের ঘরে বাস করতেন ৭১’র রণাঙ্গনের সৈনিক হেলুমিয়া। দু:স্থ্য মুক্তিযোদ্ধারে জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সরকারি অর্থায়নে বাড়িটি নির্মিত হয়। বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ এলজিইডি গেল অর্থ বছরে সাড়ে নয় লাখ টাকা বাড়িটি নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সম্রাট কন্সট্রাক্শন ১২% নিম্মদরে, ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯৪ টাকায় কাজটি করার চুক্তিবদ্ধ হয়। বাড়িটি তৈরিতে ব্যবসায়িকভাবে লাভ করতে পারেননি ঠিকাদার। তবে একজন দু:স্থ্য মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি নির্মাণ করতে পেরে তারা খুশি হয়েছেন।উপজেলা প্রকৌশলী জানান, বাড়ি ও সংযুক্ত দু’টি পশুপালন সেট নির্মাণ কাজের গুণগতমান সন্তোষজনক।
দেশ স্বাধীনের পর ৭০’র দশকের শেষদিকে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হেলুমিয়া পার্বত্য লামা উপজেলা পুন:র্বাসিত হন। লামা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে একটি বাঁশের ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করে স্ব-পরিবারে বসবাস করতেন। শহরের হোটেল রে¯তুরাগুলোতে পানির ভার বহন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন এই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। এসব মুক্তিযোদ্ধারা ছিল অনেকটা অবজ্ঞা-অবহেলার পাত্র।
১৯৯৭ সালে তৎকালীন সময়ে দেশের কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় হেলুমিয়াকে নিয়ে নানা শীরোনামে স্থানীয় সাংবাদিক অনেক লেখালেখিও করেছিল। এর ফলে অত্র উপজেলার হেলুমিয়াসহ আরো বীর মুক্তি সেনানিদের মহান স্বাধীনতায় যুদ্ধজীবনের কাহিনী নিয়ে ফলাও করে রিপোর্ট হতে থাকে। তৎসময় রাজনৈতিকভাবেও পরিবেশ অনেকটা বীরমুক্তিযোদ্ধাদের অনুকুলে আসে।
এর আগে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতা আসার পর দেশের সূর্য্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, বিশেষ করে দরিদ্র ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে থাকেন। এ ধারাবাহিকতায় সরকার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় গঠনসহ দফে দফে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিবৃদ্ধি ও দু:স্থ্য-যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়াস নেন।২০০১ সালে বিষয়টি রাজনৈতিক সংস্কৃতির জালে পেছিয়ে যায়। ২০০৯ সাল থেকে আবার বর্তমান জাতির জনকের কণ্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে ধারাবাহিক উন্নয়ন শুরু করেন ৭১’র রণাঙ্গনের মুক্তিসেনা ও তাদের ত্যাগের ফসল স্বাধীন সেনার দেশ গড়ার। ৪৪৬ স্কোয়ার ফিট আয়তনের ১টি বিল্ডিং বাড়িটি ও ২টি ডেইরী, পোল্ট্রি সেটের মালিক হতে পেরে খুশী হলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হেলুমিয়া।