মো: ফরিদ উদ্দিন, লামা: বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামায় ইঞ্জিন চালিত বোট নৌকা ডুবে ম্রো সম্প্রদায়ের ৩ জন নিখোঁজ হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায় লামা পৌরসভার লামামুখ এলাকার মাতামুহুরী নদী ও লামা খালের মোহনায় এই ঘটনা ঘটে। সাপ্তাহিক হাটবারে লামা বাজার হতে পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় শেষে বাড়ি ফিরছিল তারা।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হল, লামা সদর ইউনিয়নের নতুন লাইলা পাড়ার পয়াং ম্রো এর ছেলে মেনপ্রে ম্রো (৩৫), একই ইউনিয়নের তাউ পাড়ার চিংক্রাত ম্রো এর ছেলে রেনসাং ম্রো (৪০) ও ফাইতং চিংকক পাড়ার লোলেক ম্রো (৫৫)।
নৌকার মাঝি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, লামামুখ মাতামুহুরী নদীর নৌকা ঘাট হতে ১৭ জন যাত্রী নিয়ে পোপা খাল দিয়ে তাউ পাড়া যাচ্ছিলাম। লামামুখ ঘাট হতে ৫শত গজ দূরে মাতামুহুরী নদী ও লামা খালের মোহনায় নৌকা পৌঁছালে উজানের খরস্রোত পানির ধাক্কায় নৌকা উল্টে যায়। এসময় ১৪ জন যাত্রী সাঁতার কেটে উঠে আসলেও বাকী ৩জন যাত্রী পানিতে ডুবে যায়। তাদের খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
নৌকা যাত্রী থং পং ম্রো (১৩) বলেন, আমার বাবাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নৌকা ডুবি ঘটনায় বেঁচে ফেরা যাত্রী মেনতাই ম্রো (৩৫), মংপুং ম্রো (৪০) ও সাংরাউ ম্রো (৪৫) বলেন, আমরা ১৬ জন মুরুং সম্প্রদায়ের লোক নৌকায় ছিলাম। ১৩ জন কিনারে আসতে পেরেছি। বাকী ৩ জনকে পাওয়া যাচ্ছেনা।
নৌকা ডুবি ঘটনায় দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন। তিনি বলেন, নৌকায় মাঝি সহ মোট ১৮ জন যাত্রী ছিল। ১৬ মুর্রুং সম্প্রদায়ের আর ২ জন বাঙ্গালী। মাঝি শফিকুল ইসলাম ও অপর বাঙ্গালী যাত্রী শহীদুল ইসলাম নয়ন সহ ১৩ মুরুং যাত্রী কিনারে উঠে এসেছে। ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। এই ইঞ্জিন চালিত বোট নৌকায় যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৮ জন কিন্তু নিয়েছে ১৮ জন। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে এই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে।
দূর্ঘটনায় বেঁচে ফিরে আসা যাত্রীরা হল, মেনতাই ম্রো (৩৫), মংপুং ম্রো (৪০), ল্যাং রাউ ম্রো ((৩৫), পাদন ম্রো (৪২), হানুয়াই ম্রো (৩২), কেম প্রে (৪৮), সাংরাউ ম্রো (৪৫), রাং লা ম্রো (৫২), মেনরাং ম্রো (৫৫), গইয়ে রা ম্রো (৫০), রেনাই ম্রো (৪৯), থং পং ম্রো (১৩), খিং ওয়াং ম্রো (৩০) ও শহীদুল ইসলাম নয়ন (২০)।
কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় লামা ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার দলের লিডার বিশান্তর বড়ুয়া বলেন, আমরা নিশ্চিত হয়েছি ৩ জন নিখোঁজ হয়েছে। তাদের উদ্ধারে চট্টগ্রাম হতে ডুবুরী আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধার কাজে লামা থানা পুলিশের সদস্যরাও যুক্ত হয়েছে।
এই ঘটনায় লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি ও লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা দুঃখ প্রকাশ করেন।এবং সহায়তার করার কথা জানান।