চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি :
চুয়াডাঙ্গা জেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে টার্কি মুরগীর খামার। লাভজনক হওয়ায় এ মুরগীর খামারের দিকে ঝুঁকছে মানুষ। গতবছর জেলায় ছোট বড় ২০টির মত টার্কি মুরগীর খামার ছিলো। বর্তমানে জেলায় ছোট বড় প্রায় ৩৮টি খামার গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৮টি, আলমডাঙ্গায় ৮টি দামুড়হুদা উপজেলায় ১২টি ও জীবননগর উপজেলায় ১০টি। এসকল খামারে ছোট বড় প্রায় ৩ হাজার মুরগী রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী কুতুবপুর গ্রামের মানিকের ছেলে নতুন খামারি শহিদুল ইসলাম জানান, গত বছরের জুলাই মাসে তিনি ঢাকা থেকে ১লক্ষ টাকা দিয়ে ৪৫ টি ৬ মাস বয়সী মুরগী কিনে আনে। বাড়িতে ছোট ছোট ৩টি টিনের সেড বানিয়ে মুরগী পালন করতে থাকে এর কয়েক দিনের মাথায় ঐ মুরগী ডিম দিতে শুরু করে। বছরে এ মুরগী ১১০ টি থেকে ১৪০ টি পর্যন্ত ডিম দেয়। মুরগী খুব দ্রুত বাড়ে ৬ মাসের মুরগী প্রায় ৬/৭ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। ১টি টার্কি মুরগীর ওজন প্রায় ১৬ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এলাকার বাজারে প্রতি কেজি মুরগীর গোস্ত বিক্রি হয় সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকায়। ডিম জেলা সদরের প¦ার্শবর্তী গোকুলখালি গ্রামের জাকিরের হ্যাচারিতে বাচ্চা ফোটানের জন্য দেয়া হয়। এরই মাঝে সহিদুল ইসলাম বাড়ির সামনে আমবাগানের মধ্যে ১লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে টিনের ছাউনি দিয়ে বিশাল আকারের সেড তৈরি করে। হ্যাচারিতে দেওয়া ডিম বাচ্চা ফোটারপর ১দিন থেকে ৭দিনের বাচ্চা বাড়ির এক সেডে ও ১মাস থেকে ১মাস ১০ দিনের বাচ্চা অন্য সেডে রেখে পরিচর্যা শুরু করে। এ বাচ্চার বয়স ৪ মাস বয়স হলে সেগুলোকে বাগানের নতুন সেডে স্থানন্তর করা হয়। বর্তমানে তার এ খামারে মোরগ ও ডিম দেয়া মুরগী আছে ৩৬ টি ৪ মাস বয়সী ১শতটি ৭দিনের বাচ্চা আছে ৯৪টি ও ৪৫ দিনের মোরগ মুরগী মিলিয়ে প্রায় আড়াইশ মোরগ মুরগী আছে। ১১ মাসে সেড তৈরি বাদে খাবার, ওষুধসহ পরিচর্যা খরচ হয়েছে ৪ লক্ষ টাকার মত। বাচ্চা ডিম বিক্রি হয়েছে আড়াই লক্ষ টাকার। বর্তমানে খামারে ৫লক্ষাধিক টাকার মোরগ,মুরগী রয়েছে। টার্কি সাধারনত দানাদার খাদ্য ছাড়াও কলমির শাক, বাঁধাকপি ও সবজি জাতীয় খাবার খায়।
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডাঃ মশিউর রহমান জানান, আমাদের দেশের অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশ পশু-পাখি পালন অন্যান্য দেশের তুলনায় সহজ ও উপযোগী। টার্কির দাম তুলনামূলক একটু বেশি। চর্বি কম হওয়ায় অন্যান্যের মুরগীর তুলনায় এর মাংস খুবই সুস্বাদু। তবে স্থানীয় ভাবে এখানে এখনও এর বাজার গড়ে উঠেনি। ঢাকায় এর গোস্তের প্রচুর চাহিদা রয়েছে টার্কি মুরগী এখনো পাখি শ্রেণীর অর্ন্তভুক্ত। রোগ-বালাই ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটি পালন করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।