নিউজ ডেস্ক:
রোজা শুরু হয়ে গেছে। রোজাদার’রা সারা দিন না খেয়ে থাকেন, তাই অনেকে মনে করেন, এই সময়ে খাদ্যতালিকায় বিশেষ দৃষ্টি না দিলেও চলবে। যাঁরা ডায়েট করেন, তাঁদের অন্য সময়ে সাধারণত প্রতি ঘণ্টায় কিছু না কিছু খেতে হয়।
রোজার মাসে তাঁরা বুঝে উঠে পারেন না, কী ভাবে ডায়েট করবেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, রোজায় সঠিক নিয়ম মেনে ডায়েট করতে পারলেই শরীরকে নিজের ইচ্ছামতো গঠন করা সম্ভব। ডায়েটেশিয়ানরা তো তেমনই বলেন।
রোজার সময় ইফতারের পর পরই না খেয়ে কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে রাতের খাবার খাওয়া উচিৎ।
যাঁরা নিয়মিত ডায়েট করেন, তাঁরা রোজায় সারা দিন না খেয়ে থাকা আর রোজা শেষে ঈদের আগমনের অপেক্ষায় থেকে নিজের ডায়েট ভুলে যান। কিন্তু স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে রোজার মাসেও ডায়েট করার বিকল্প নেই।
বেশির ভাগ মানুষই সারা দিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় ইফতারের সময়, রাতের খাবারে এবং সেহরী’র সময় এত বেশি খাবার খেয়ে ফেলেন যে, তা তাঁদের দৈনিক চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি হয়ে যায়। তাই নিজের শরীরকে ঠিক রাখতে কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলা উচিৎ।
পুষ্টিবিদদের মতে, ‘রোজায় ইফতারের সময় ক্ষুধা বেশি থাকায় অনেক খাবার খেয়ে ফেলা যাবে না। তেলজাতীয় বা চিনিমিশ্রিত যে কোনো খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ইফতারের সময় ফলমূল, চিড়া, সবজি দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়া যেতে পারে। বেশি ক্ষুধা লাগলেও পরিমিত খাবার খেতে হবে। ইফতারে হালকা খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে রাতের খাবার খেতে হবে। বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সেহরীর সময়ও খুব ভারী খাবার খাওয়া ঠিক নয়।’
প্রচুর পানি পান করুন-
রমজানে নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ইফতারের সময় থেকে সেহরী পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। নিয়ম করে সেহরীর সময় অন্তত ২ গ্লাস, রাতের খাবার ও সেহরীর আগে ৪ গ্লাস ও সেহরীর সময় ২ গ্লাস পানি পান করলে শরীরের পানির চাহিদা পূরণ হয়। তা ছাড়া এই পানি রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
হালকা ইফতারি করুন-
সারা দিন না খেয়ে থাকার পর ইফতার করা হয়, তাই পুরো রোজায় ইফতারে আপনি কি খাচ্ছেন, তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইফতারে কোনোভাবেই পেট ভর্তি করে খাবার খাওয়া যাবে না। কিছুক্ষণ পরেই রাতের খাবার খাবেন এই চিন্তা করেই লেবুর শরবত, একটি খেজুর, সালাদ, টক দই, মৌসুমি ফলমূল বা জুস দিয়ে ইফতার সেরে ফেলুন। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরা বিকল্প চিনি দিয়ে লেবুর শরবত বানিয়ে খাবেন। ভাজাপোড়া থেকে একদমই দূরে থাকবেন। বেশি ভাজাপোড়া খেলে বদহজম, বমি, গ্যাস হতে পারে।
সেহরীর সময় পরিমিত খান-
রোজার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে সেহরী। অনেকেই রাতে অনেক বেশি খাবার খেয়ে আর সেহরী খেতে চান না। কিন্তু সুস্থ থাকার জন্য এটি সঠিক পথ নয়। সারা দিন নিজেকে তৃষ্ণা ও ক্ষুধা থেকে বিরত রাখতে চাইলে সেহরীতে পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন, আয়োডিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ফল, সবজি সেদ্ধ, সবজি সালাদ, দুধ বা টক দই, ভাত/রুটি, মাছ বা মুরগির মাংস অথবা ডিম ও ডাল খেতে পারেন।
রোজায় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সারা দিন ঘুমিয়ে থাকা সঠিক উপায় নয়। দৈনন্দিন কাজ আগের মতোই করতে থাকুন। যাঁরা অন্য সময়ে সকালে ব্যায়াম করতেন, তাঁরা ইফতারের পর নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন, সারা দিন খালি পেট থাকার ফলে আপনার চর্বি সহজে কমিয়ে ফেলতে পারবেন।