নিউজ ডেস্ক:মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকাল আটটার দিকে সোনাপুর গ্রামের মোসলেম মন্ডলের বাঁশ বাগান থেকে আয়েশা খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা এই নিয়ে গুঞ্জন চলছিল গ্রামবাসীর মাঝে।
জানা যায়, সোনাপুর গ্রামের মতিম মন্ডলের ছেলে নারীলোভী বাপ্পারাজের লালসার শিকার হয়ে পাঁচ বছর আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম ঝড়ুর মেয়ে আয়েশা খাতুন। বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিয়ে দিতে বাধ্য করেন বাপ্পারাজ। ইতিপূর্বেও বাপ্পারাজ চারটি বিয়ে করে এবং তাদের তালাক দেয়। বাপ্পারাজ প্রভাবশালী হওয়ায় সে একের পর এক এই ধরনের অপকর্ম করে বেড়ায়। পরে তারই লালসার শিকার হয় দিনমজুর মনিরুল ইসলাম ঝড়ুর সুন্দরী কন্যা আয়েশা খাতুন এবং তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পাঁচ বছরের সংসার জীবনে তাদের ঘরে জন্ম নেয় রিয়ান (১) নামের ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান । আয়েশার সাথে বিয়ের পরে বেরিয়ে আসে বাপ্পারাজের আসল চেহারা। বিভিন্ন সময়ে এসে বিভিন্ন অজুহাতে আয়েশার উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে গতকাল সকালে গ্রাম্য কবরস্থানের পাশের একটি বাঁশবাগানে আয়েশার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় পিজির নামের এক যুবক। সে জমিতে সেচ দেওয়ার কাজে যাওয়ার পথে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেয়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে যাদুখালি পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই উত্তম কুমার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। আত্মহত্যার খবরে লাশ দেখতে ভিড় জমান উৎসুক জনতা। মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থাতেই মাটিতে পা ঠেকে থাকায় সন্দেহের তীর ছোড়েন এলাকাবাসী। তারা বলেন একি আত্মহত্যা না কি কোথা থেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে এনে লাশটি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পরে লাশটি পুলিশ হেফাজতে নিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করার জন্য মেহেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে এনে রাখা হয়। প্রতিবেদন হাতে এলেই জানা যাবে হত্যার প্রকৃত রহস্য। হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে গা ঢাকা দেয় বাপ্পারাজ ও তার পরিবারের লোকজন। এ ব্যাপারে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হলে এশাবাদ গ্রাম্য কবরস্হানে লাশ দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছিল।