মেহেরপুর প্রতিনিধি ॥ দিনভর নানা অঘটন ঘটনের পর ৪ বছরের শিশু রাফিকে তার মায়ের জিম্মায় ফিরিয়ে দেওয়া হলো। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মেহেরপুর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদাতে বিচারক মহিবুল হক শিশু রাফিকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়ার রায় দেওয়ার পর বিকালের দিকে পুলিশ আদালতের নির্দেশনায় মায়ের কাছে তুলে দেন। এর আগে ঘটে নানা ধরনের অঘটন। জানাগেছে মেহেরপুর সদর উপজেলার বশন্তপুর গ্রামের ছমির আলীর মেয়ে মৌসুমী খাতুনের সাথে মেহেরপুর শহরের থানা পাড়ার আঃ সাত্তারের ছেলে জাহাঙ্গীরের সাথে ২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারী পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে জন্ম নেয় রাফি। এদিকে বিবাহিত জীবনে নানা কারণে তাদের মাঝে মনমালিন্য হয় এবং জাহাঙ্গীর তার স্ত্রী মৌসুমীকে তালাক দেয়। সন্তান রাফি থেকে যায় তার পিতার কাছে। এদিকে স্ত্রী’র দায়ের করা এক মামলায় জাহাঙ্গীর বেশ কিছু দিন কারাভোগ করে। এদিকে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তালাকের ঘটনার পর মৌসুমী তার সন্তানকে ফিরে পেতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের কারেন। মঙ্গলবার ঐ মামলার শুনানী শেষে আদালত শিশু রাফিকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দেন। এদিকে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক শিশু রাফিকে নিয়ে তার মা সহ নিকট আত্মীয়রা ইজি বাইকে ওঠার পর পর পিতা সহ তার লোকজন তাকে ছিনিয়ে নেয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। শিশু রাফি তার মায়ের পরিবর্তে পিতার কাছে যাবে বলে কান্নাকাটি শুরু করে। পরে কোর্ট পুলিশ শিশু রাফি ও পিতা জাহাঙ্গীর’কে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এসময় তার মা মৌমুসী বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে ম্যাজেস্ট্রেট, পুলিশ সহ বিপুল পরিমান সাধারণ মানুষ রাফিকে তার মায়ের কাছে যাবার কথা বললেও সে কান্নাকাটি করে এবং পিতার কাছে যাবে বলে জানায়। এ নিয়ে মূলত বেলা ৩টা পর্যন্ত সকলেই এক প্রকার বিপাকে পড়ে যায়। পরে বিচারক নির্দেশনাবলি কোর্ট পুলিশের কাছেন পাঠানোর পর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ শাহিনুর রহমান শিশু রাফিকে তার মায়ের কাছে তুলে দেন। এর আগে এ ঘটনা নিয়ে কোর্ট এলাকা মূলত কান্ন আর আহাজারিতে ভরে ওঠে। কখনো শিশুর কান্না, কখনো তার মা মৌসুমী, নানী, ছোট মামার কান্না, আবার কখনো পিতা জাহাঙ্গীর তার ফুফু সহ অন্যদের কান্নাকাটি এলাকা ভারী হয়ে ওঠে। মা মৌসুমী একাধিকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।