জনপ্রতিনিধিকে নির্যাতনের ঘটনায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ
নিউজ ডেস্ক:মুজিবনগরের বাগোয়ান ইউপি সদস্য দিলিপ মল্লিককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নিযার্তনের অভিযোগ উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে। গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত দিলিপ মল্লিক ভবেরপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার খোকন মল্লিকের ছেলে এবং তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তবে পুলিশের কোন ইউনিট এ নির্যাতন চালিয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি দিলিপ মল্লিক। এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মেহেরপুর জেলা পুলিশের কোন ইউনিট এ কাজে জড়িত নয়। তবে, র্যাবের ঝিনাইদহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের একটি টিম এ অভিযান চালিয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আহত দিলিপ মল্লিক জানান, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির প্রাচীর টপকিয়ে একদল লোক বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে গাড়িতে করে নিয়ে যায় দক্ষিণপাড়ায়। সেখান থেকে মনিরুল ইসলাম নামের আরেক জনকে ধরে নিয়ে গাড়িতে তুলে। পরে সেখান থেকে দারিয়াপুর ফুটবল মাঠের কাছে নামিয়ে নদীর ধারে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের দু’জনকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। আর বলে ৫শ’ বোতল ফেনসিডিল কোথায় রেখেছিস। এভাবে নির্যাতনের পর আমার কাছে থেকে কোন তথ্য না পেয়ে রাত ২টার দিকে ছেড়ে দেয়। পরে মুজিবনগর থানার ওসির সহযোগীতায় পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।’ তিনি আর বলেন, ‘তাদের জেরা করার ধরণ দেখে মনে হচ্ছিল পুলিশের লোক। তারা যে জ্যাকেট গায়ে ছিলে অন্ধকারে শেষের অক্ষরটা বি লেখা দেখতে পেয়েছিলাম।’
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাশেম জানান, ‘আমরা খবর পেয়ে তাকে দারিয়াপুর বাজার থেকে উদ্ধার করে রাতে বাড়িতে পৌছে দিয়েছি। আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি মেহেরপুর জেলা পুলিশের কোন দল এ কাজ করেনি।’
ঝিনাইদহ আঞ্চলিক কোম্পানী কমান্ডার এএসপি মাসুদ আলম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুজিবনগরে ক্রেতা সেজে র্যাবের একটি টিম সেখানে অবস্থান করে। সন্ধ্যার পর ৫শ’ বোতল ফেনসিডিল ক্রেতাদের কাছে পৌছে দেওয়া হবে নিশ্চিত করেন মনিরুল ইসলাম মনা নামের এক ট্রাক চালক। শেষ পর্যন্ত রাত ১০টা বেজে গেলেও তারা ফেনসিডিল নিয়ে আসে না। ধারণা করা হয় তারা জেনে ফেলে, ক্রেতারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ হবে। পরে মধ্যেরাতে ওই ট্রাক চালক দিলিপ মেম্বারের কাছে ফেনসিডিল আেেছ এমন তথ্য দিলে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। সাধারণত মাদক ব্যবসায়ীরা ধরা খাওয়ার ভয়ে আর স্বীকার করে না। পরে তার কাছে থেকে ফেনসিডিল না পাওয়া গেলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাঝে কিছু চড় থাপ্পড় মারার ঘটনা ঘটতে পারে।
এএসপি মাসুদ আলম আরো জানান, দিলিপ মেম্বারের সাথে মনিরুল ইসলামের মোবাইল থেকে কয়েকবার কথা হয়েছে আমাদের সদস্যদের। এসময় মনিরুল ঝড়ু মল্লিক নামের আরো একজনের কথা বললেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, সকালে আহত দিলিপ মন্ডলকে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, একজন ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির মতো মানুষকে যদি তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়। এছাড়া ভুয়া তথ্যে একজন জনপ্রতিনিধিকে নির্যাতনের ঘটনায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুজিবনগরের বিশিষ্টজনেরা।