নিউজ ডেস্ক:
ইতিবাচক চিন্তায় মনে আসে প্রশান্তি। নেতিবাচক চিন্তায় মনে আসে ভয়, সংশয়। তৈরি হয় মানসিক চাপ বা স্ট্রেস।
অধিকাংশ দুশ্চিন্তাই অমূলক, বাস্তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ঘটে না। অথচ সে বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার শেষ থাকে না। এই ধরুন বস ডেকেছে। খবরটি শোনার পর থেকে মনের মধ্যে উৎকণ্ঠা ভয় কাজ করছে না জানি কি হয়। নিশ্চয়ই কোনো ভুল হয়েছে! বস যদি বকা দেন। অতীতে কখন কী ভুল করেছিলেন, তার ফলাফল কী হয়েছিল সে বিষয়গুলো বারবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
চেহারায় উৎকণ্ঠার প্রতিফলন সঙ্গে করে বসের সামনে যাওয়ায় বসের মেজাজ গেল বিগড়ে। আচ্ছা বলুন তো, গোমড়া করা মুখ দেখতে কার পছন্দ! কেউ মুখ ভার করে বসে থাকা দেখতে পছন্দ করে না। তা আপনি যত কষ্টেই থাকুন না কেন। যাওয়ার পর শুনলেন আপনার বিশেষ কোনো একটি কাজ তার পছন্দ হয়েছে। তবে তাতে সামান্য কিছু বিষয় পরিবর্তন দরকার। সেটা আপনাকে হাসিমুখেই বলতে চেয়েছিলেন। মুখ গোমড়া করে গেছেন, তিনিও সুযোগ পেলেন। মৃদু কাঠিন্য দেখিয়ে দু চারটা কথা শুনিয়ে দিলেন।
অথচ আপনি যদি হাসিমুখে সেখানে যেতেন সেখানে হয়তোবো আপনাকে এমন কথা শুনতে হতো না। আসলে দুর্বলের ওপর সবলের ভিন্ন দৃষ্টি অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়। এটা স্বাভাবিক। তাই বলে সবাইকে এক পাল্লায় হিসেব করাটা হবে বোকামি।
আসলে কথা হচ্ছিল, স্ট্রেস নিয়ে। স্ট্রেস থেকে তৈরি হয় টকসিন। যা আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ রাসায়নিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলে। আপনি যখন কোনো বিষয়ে খুব বেশি নেতিবাচক চিন্তা করবেন যেমন- ‘যদি’ না হয়, কিংবা সন্দেহ প্রবণতা হৃদয়ে শিকড় গেড়ে ফেলেন তা একসময় তা আপনার শারীরিক কার্যক্রমে প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রভাব বিস্তার করবে। মাথাব্যথা থেকে শুরু করে পায়ের আঙুল পর্যন্ত বাদ যাবে না। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রোগব্যাধি আকারে তা প্রকাশ পাবে।
আয়নায় যেমন নিজের প্রতিবিম্ব দেখা যায়, তেমনি হতাশাগ্রস্ত মানুষের চেহারা দেখলেই তা বোঝা যায়। খুব কাছের বন্ধু ছাড়া কেউ তাদের সাহায্য করতে চায় না। চেহারায় এক ধরনের অনিশ্চয়তাবোধ কিংবা সংশয় তাদেরকে তাড়া করে বেড়ায়। একসময় তা চেহারায় স্থায়ী প্রভাব ফেলতে শুরু করে।
ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক পেশাগত সবক্ষেত্রেই দরকার ইতিবাচকতা। ইতিবাচকতা আপনাকে দেবে মানসিক প্রশান্তি। নেতিবাচকতার প্রভাবে সৃষ্ট টকসিনের প্রভাব থেকেও আপনার শরীর থাকবে মুক্ত ও শারীরিকভাবে সুস্থ।
নেতিবাচক চিন্তার ফলে আমাদের শরীর ও মনের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি হয়। তখন স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়, স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি হারিয়ে ফেলে অনেকে বোকার মতো আচরণ করেন। এছাড়াও মাইগ্রেন, হাত ও পায়ের তালু ঘেমে যাওয়া, হজমে সমস্যাতো আছেই।
স্ট্রেস থেকে তৈরি হয় সংশয়, সন্দেহ, অনিশ্চয়তাবোধ আর তা টক্সিনের মাধ্যমে পুরো শরীরের কোষে কোষে ছড়িয়ে পড়ে। অল্পতেই শরীর হাঁপিয়ে ওঠে। অল্পতেই ক্লান্তি ভর করে শরীরে।
আপনি ইতিবাচক হলে সহজেই যে কোনো স্ট্রেস মোকাবেলা করতে পারবেন। আর তাই স্ট্রেস মুক্ত থাকতে ইতিবাচক হোন। আপনার শরীর ও মন প্রাকৃতিকভাবেই সুস্থ থাকবে।