পলি জমে নদী ভরাট : ব্যবস্থা নেয়ার দাবি
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:দামুড়হুদা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র খরস্রোতা বাঁধাগ্রস্থ মাথাভাঙ্গা নদীর তলদেশ ভরাট হচ্ছে। ফলে ব্যাপক সংকটে পড়েছে নদীটি। এ নদীর বিভিন্ন স্থানে গাছের ডাল ও বাঁশ দিয়ে অসংখ্য কোমর ঘেরা হয়েছে। ফলে নদীর ¯্রােতকে বাধাগ্রস্ত করছে। সরকার যখন শত শত কোটি টাকা খরচ করে দেশের নদীগুলোর হারানো যৌবন ফেরাতে সচেষ্ট তখন চুয়াডাঙ্গা জেলার একমাত্র প্রাচীন নদী মাথাভাঙ্গায় কোমর, বাঁধ ও কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে এক শ্রেণির অর্থলোভী মানুষ। এর ফলে ¯্রােত বাধাগ্রস্ত হয়ে পলি জমে ভরাট হচ্ছে নদীর তলদেশ। প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরেও শুরু হয়েছে কোমর, বাঁধ ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার মহাউৎসব। চলতি আষাঢ়-শ্রাবন মাসে নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার কাজ শুরু করেছে এই অর্থলোভীরা। এছাড়াও বছরের সব সময়তেই দেখা যাচ্ছে কোমর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেই তখন কিছুটা দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। সংশ্লিষ্টরা এ সময় দায়সারা গোছের কিছু পদক্ষেপ নিলেও অদৃশ্য সুঁতোর টানে এসব বাঁধ বা কোমড় অপসারণের স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা একমাত্র নদী মাথাভাঙ্গা। একদিকে প্রবাহিত পানির অভাব অন্যদিকে কিছু বিবেকহীন মানুষের নানারকম অত্যাচারে নদীটি আজ ব্যাপক অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এর পানি কমে যাওয়ায় এক শ্রেণির মানুষ প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় বিভিন্ন নামধারী দলীয় লোকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে ও কোমর ঘিরে অবাধে মাছ শিকার করছে। ফলে পানির ¯্রােত বাধাগ্রস্ত হয়ে পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর পাতালদেশ। এছাড়া এসব অসাধূ ব্যক্তি নদীর দুই পাশের মাটি কেটে সমান করে নানা রকম ফসলের আবাদ করছে। ফলে নদীর দুইপাশের আলগা মাটি বৃষ্টির সময় পানিতে ধুয়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার সরজমিনে দেখা গেছে, দামুড়হুদার রঘূনাথপুর থেকে শ্যামপুর, পাইপঘাট ও জয়নগর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক কোমর ও বাঁধ ঘেরা রয়েছে। এছাড়াও সুবলপুর বাঁকে, গোবিন্দপুর ও রুদ্রনগর গ্রামের বিভিন্ন স্থানে কোমর ঘেরা রয়েছে। যা এখনো সংশ্লিষ্টদের চোখে পড়েনি। স্থানীয় দলীয় লোকজনকে বিশেষ ব্যবস্থায় ম্যানেজ করেই জেলে ও দালালরা মাছ শিকার করছে। এছাড়া অভিযোগ আছে, এসব কোমরে যা মাছ ধরা পড়ে তার একটি অংশ প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় দলীয় নামধারী নেতাদের বাসায় নিয়মিত পাঠানো হয়। নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে বা নদীর স্্েরাত বাধাগ্রস্ত করে মাছ শিকার আইনগতভাবে নিষিদ্ধ হলেও এ নদীতে অবাধে অবৈধভাবে চলছে মাছ শিকার। এলাকাবাসীর দাবি ঐতিহ্যবাসী মাথাভাঙ্গা নদীকে বাঁচাতে কোমর স্থাপনকারী ও কোমর, বাঁধ ও কারেন্ট জাল দিয়ে অসাধু মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। বিষয়টির প্রতি সুনজর দেবেন বলে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতি সচেতন মহলের জোর দাবি করেছেন এলাকাবাসী।