আহত সাংবাদিকেরা হলেন- যমুনা টিভির রিপোর্টার ভাস্কর ভাদুড়ী, কালবেলার আকরাম হোসাইন ও জনি রায়হান, আজকের পত্রিকার মোজো রিপোর্টার শাবিব, চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক সুলাইমান কবির। আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে বিকেল ৪টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ৬ জনের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে আন্দোলনকারীরা টিএসসির দিকে রওনা দিলে আন্দোলনকারীদের ওপর টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
গতকাল দেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে নিহতদের জন্য এই গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিলের কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। যদিও কর্মসূচিটির নির্ধারিত স্থান ছিল রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে। তবে সেখানে পুলিশের বাধায় তা পালন করতে পারেননি আন্দোলনকারীরা।
এর আগে টিএসসি এলাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আক্তার হোসেনসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করার সময় অন্তত ৫টি সাইন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায় পুলিশ।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ঢাবি কর্তৃপক্ষের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছে আন্দোলনকারীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়ে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সার্জিস আলম বলেন, দেশে কোনো মহাদুর্যোগ বা এ রকম কিছু চলছে না। যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন চলছে। হল ছাড়তে আন্দোলনকারীদের নির্দেশ দেওয়ার মানে হলো আন্দোলন নষ্ট করা। আমরা এমন সিদ্ধান্ত মানব না। আমরা হল ছাড়ব না। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এর আগে মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে ৬ শিক্ষার্থী নিহত হন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের হলগুলো থেকে ছাত্রলীগ নেতানেত্রীদের বের করে দেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে ঢাবিতে ছেলেদের বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও শাখা নেতাকর্মীদের কক্ষে ভাঙচুর চালানোসহ তাদের জিনিসপত্র পুড়িয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিতে উপাচার্যদের চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ প্রেক্ষাপটে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের জরুরি সভা ডাকা হয়। সেই সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।