চুয়াডাঙ্গায় একদিনে নারীসহ ৪ জনের আত্মহত্যার অপচেষ্টা
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা শহরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ২০১৮ সালে এ আত্মহত্যার সংখ্যা অনেক বেশি বলে জানা গেছে। আর আত্মহত্যার কারণ হিসেবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহের জের, সংসারে অভাব-অনটন, পরকীয়া প্রেম ও যুবক-যুবতীদের পছন্দমত বিয়ে না দেয়াকে দায়ী করা হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আত্মহত্যা করে মৃত্যুবরণ করা মানুষদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ছেলেদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে এবং মেয়েদের বয়স ১৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এছাড়া কয়েকজন কিশোরীও রয়েছে এই তালিকায় যাদের বয়স ১৩ থেকে আঠার বছর বয়সের মধ্যে। এদিকে, গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গার বিভিন্নস্থানে নারীসহ ৪জন আত্মহত্যায় ব্যর্থ হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামের বাজারপাড়ার মঙ্গল ম-লের রকিবুল ইসলাম (৩২), চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ি গ্রামের ভাড়াটিয়া লিটনের স্ত্রী সোনিয়া খাতুন (৩০), পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের আসাবুল হকের ছেলে জন (১৮) ও আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি গ্রামের মৃত. মুনসাদ আলীর ছেলে জুয়েল (১৮)।
অনুসন্ধানী ও পারিবারিক বক্তব্যে জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহের জের, সংসারে অভাব-অনটন, পরকীয়া, বাবা-মায়ের অতিরিক্ত শাসন বা অবহেলা, অপ্রাপ্তবয়সে প্রেম ও যুবক-যুবতীদের পছন্দমত বিয়ে না দেয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। এতে রাগে অভিমানে কেউ কেউ গলায় ফাঁস এবং বিষপানে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালাই। তবে হারপিক পান ও ঘুমের ঔষুধ সেবনেও আত্মহত্যা করে থাকে বলে জানা গেছে। এবিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। পারিবারিক সম্পর্কগুলোর পারস্পরিক অবস্থান দূর্বল হয়ে পড়েছে। আত্মহত্যার সবচেয়ে প্রচলিত কারণ হলো মানসিক চাপ ও বিষাদগ্রস্ততা। এর সঙ্গে যুক্ত হয় যন্ত্রণার স্থায়ী অনুভূতি এবং আত্মহত্যার মাধ্যমে তা থেকে মুক্তি পাওয়ার অনড় এক বিশ্বাস। একসময় বিষাদগ্রস্ত মানুষটি মনে করে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো। আর তখনই তিনি আত্মহত্যা করেন। তারা আরও বলেন, একজন ব্যক্তির আত্মহত্যার প্রবণতা মূলত ছোট বয়স থেকে গড়ে ওঠে। বাবা-মায়ের অতিরিক্ত শাসন বা অবহেলার কারণে এমনটি হতে পারে। এ ছাড়া পরিবার ছোট হয়ে আসছে। শিশুরা মেলামেশা বা তার ভাব প্রকাশের জন্য কাউকে পাচ্ছে না। ফলে বাড়ে হতাশা ও একাকিত্ব। এটি শিশুর মধ্যে থেকে যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিকভাবে এটি বহন করতে থাকে। কেউ কিশোর বয়সেই আত্মহত্যা করে। তবে এসব মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা বার্ধক্যে গিয়ে বাড়ে। শুধুমাত্র সচেতনতার মাধ্যমে আত্মহত্যার ঘটনা কমানো যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।