নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে বিশ্বব্যাংক ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন অনুমোদন দিয়েছে।
বুধবার ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এই অর্থায়নের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারকে নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তহবিল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে এবং জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে সক্ষম করে তুলবে।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে পূর্ববর্তী দুটি প্রকল্পের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএিসপি-৩) গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি বাংলাদেশের সব কয়টি ইউনিয়ন পরিষদে অর্থাৎ ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়ন পরিষদেই বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে ১১৫ মিলিয়নেরও বেশি স্থানীয় জনগণ লাভবান হবেন। প্রকল্পটি ইউনিয়ন পরিষদসমূহে জাতীয় বাজেট থেকে বরাদ্দ নিশ্চিত করবে।
প্রকল্পটি পৌরসভা এলাকায়ও সম্প্রসারিত হবে এবং পাইলটভিত্তিতে দেশের আটটি বিভাগের ১৬টি পৌরসভায় ব্লক গ্রান্টস-এর আওতায় অর্থ সরবরাহ আরম্ভ করবে। প্রকল্পে যোগ্যবিবেচিত পৌরসভাগুলো এই প্রথমবারের মতো জনগণের প্রয়োজনীয় সেবার মান বাড়াতে উপ-প্রকল্প বাছাই ও বাস্তবায়ন করতে ব্লক গ্রান্টসের মাধ্যমে অর্থ পাবে।
বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পারালকার বলেন, ‘বিকেন্দ্রীকরণকে এগিয়ে নেওয়া এবং স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালীকরণে সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নিয়মিত, অনুমেয় ও স্বচ্ছ অর্থ স্থানান্তর পদ্ধতি ইউনিয়ন পরিষদ এবং অংশগ্রহণকারী পৌরসভাগুলোকে পরিকল্পনা প্রণয়ন, অংশগ্রহণমূলক বাজেট তৈরি, সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।’
অর্থ স্থানান্তর পদ্ধতি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে, প্রকল্প শুরুর চতুর্থ বছর থেকে সরকার জাতীয় বাজেট বরাদ্দ থেকে ইউনিয়ন পরিষদসমূহে ব্লক গ্রান্টসের অর্থ সম্পূর্ণভাবে প্রদান করবে। এতে করে ইউনিয়ন পরিষদসমূহ আরো কার্যকরভাবে স্থানীয় প্রয়োজন মেটাতে এবং ইউনিয়ন পরিষদ ও বাসিন্দাদের মধ্যকার সম্পর্ক আরো জোরদার করতে সক্ষম হবে।
লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ এর বিশ্বব্যাংক টিম লিডার শেনহুয়া ওয়াং বলেন, ‘পূর্বের প্রকল্পগুলোর মতো এলজিএসপি-৩ নারীর ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে। ওয়ার্ড কমিটিসমূহ ও তদারকি কমিটির অন্তত পক্ষে এক-তৃতীয়াংশ সদস্য আগের মতোই নারী থাকবেন। নারীদের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া প্রকল্পসমূহের জন্য অনুদানের অন্তত ৩০ শতাংশ বরাদ্দ করা হবে।’
পূর্ববর্তী এলজিএসপির আওতায় ২০১১ সাল থেকে সব ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নিজস্ব পরিকল্পনায় তহবিল ব্যবহারের পূর্ণ স্বাধীনতাসহ বার্ষিক ব্লক গ্রান্টস্ পেয়ে আসছে। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি)-এর মাধ্যমে নিজস্ব পরিকল্পনায় ব্যয়ের জন্য ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে ব্লক গ্রান্টসের অর্থ প্রদান শুরু হয়, এই অনুদান সেই সময়ে একটি ইউনিয়ন পরিষদ যা পেত, এখন তার ১১ গুণ বেশি পাচ্ছে। এলজিএসপি-৩ তহবিল বরাদ্দের এই ধারাবাহিতা বজায় রাখবে।
বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে পাওয়া এই ঋণ ছয় বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এতে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।