নিউজ ডেস্ক:
বিশ্বের নানা দেশে সাইবার হানায় পণস্বরূপ বিটকয়েন দাবি করায় গত কয়েক সপ্তাহে বিটকয়েন নামটি বার বার ভাইরাল হয়ে উঠেছে। আর এখন এতটাই ভাইরাল যে, চলতি বছরে বিটকয়েনের মূল্য সর্বোচ্চ রেকর্ডে পৌঁছছে। বুধবার প্রতি বিটকয়েনের দাম দাঁড়ায় ২৩৩৯ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
কয়েনবেস নামে একটি বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, শেষ এক মাসে প্রায় হাজার ডলারের বেশি দাম বেড়েছে প্রতি বিটকয়েনের। গত বছর মে মাসেই প্রতি বিটকয়েনের দাম ছিল ৪৪০ ডলারের কাছাকাছি। আর চলতি বছর একই সময়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে বিটকয়েন।
ডলার, রুপির মতো এই ডিজিটাল সাংকেতিক মুদ্রায় বিনিয়োগ করা যে কত’টা লাভবান, তা সিএনবিসি-র একটি রিপোর্টে স্পষ্ট। সেই রিপোর্ট বলছে, ৭ বছর আগে কেনা মাত্র ০.০০৩ ডলার মূল্যে একটি বিটকয়েনর দাম এখন ২২০০ ডলার। বিটকয়েন বিনিয়োগকারীদের কাছে সোমবার দিনটি ছিল ‘বিটকয়েন পিত্জা ডে। ’ কেন?
ল্যাজলো হ্যানেজ নামে এক প্রোগ্রামার ২০১০ সালে ১০ হাজার বিটকয়েন খরচ করে ২টি পিত্জা কিনেছিলেন, এখন যার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার। সে সময় ওই পরিমাণ বিটকয়েনের মূল্য ছিল মাত্র ৪১ ডলার। যদিও হ্যানেজ সরাসরি বিটকয়েন দিয়ে পিত্জা কেনেননি। ওই দুই পিত্জা পেতে তিনি অন্য এক ইউজারকে দশ হাজার বিটকয়েন ট্রান্সফার করেছিলেন। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই এই দিনটি ‘বিটকয়েন পিত্জা ডে’ নামে ভাইরাল হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বিটকয়েন নামে এই ক্রাইপ্টোকারেন্সি কোনো সরকার বা দেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। ব্যাংক বা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও লেনদেন হয় না। এটি এমন একটি ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম, যা ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে গ্রাহক থেকে গ্রাহক লেনদেন হয়। এই প্ল্যাটফর্মটি আসলে একটি ডিসেন্ট্রালাইজড সিস্টেম, অর্থাৎ বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন সেল্ফ অর্গানাইজেশনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় বিটকয়েনের লেনদেন পরিষেবা।
একমাত্র জাপানই এই বিটকয়েন লেনদেনে উত্সাহ দেখিয়েছে। এই ক্রাইপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে সরাসরি জিনিসপত্র কেনাকাটার ভোটও দিয়েছে তারা। কীভাবে কেনা যায় এই বিটকয়েন? সিএনবিসি জানাচ্ছে, কয়েনবেস, জিবিটিসি এবং বিকে ক্যাপিটাল ডিজিটাল অ্যাসেট ফান্ড নামে বিটকয়েন এক্সচেঞ্জগুলির মাধ্যমে কেনা যেতে পারে।
তবে, বিটকয়েন লেনদেনের সুরক্ষা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ২০১৪ সালে বার বার চুরি হওয়ার কারণে এমটি গক্স নামে জাপানের একটি বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ দেউলিয়া হয়ে যায়। তাদের দাবি ছিল, হ্যাকিং-এর মাধ্যমে প্রায় ৮.৫০ লক্ষ বিটকয়েন চুরি হওয়ায় লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারেনি তারা।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।