নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গায় প্রতারক ম্যাগনেট রাজুর ফাঁদে পড়ে বাদেমাজু গ্রামের ৫ ব্যক্তি সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। রাজুর ম্যাগনেট প্রকল্পে অল্প টাকা বিনিয়োগ করে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে, তাদের গোয়ালে থাকা গরু বিক্রয় করে ও জমানো টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে রাজু। রাজুর খপ্পড়ে পড়ে আজ তারা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। প্রতারক ম্যাগনেট রাজু আলমডাঙ্গা ডাউকী ইউনিয়নের বাদেমাজু গ্রামের চা বিক্রেতা আব্দুল আজিজের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হরিণাকু-ু, মেহেরপুর ও জীবননগর থানায় একাধিক চুরি ও প্রতারণার মামলা চলমান রয়েছে। আলমডাঙ্গায় প্রতারক ম্যাগনেট রাজুর ফাঁদে পড়ে বাদেমাজু গ্রামের ৫ ব্যক্তি সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। রাজুর ম্যাগনেট প্রকল্পে অল্প টাকা বিনিয়োগ করে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে, তাদের গোয়ালে থাকা গরু বিক্রয় করে ও জমানো টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে রাজু। রাজুর খপ্পড়ে পড়ে আজ তারা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। প্রতারক ম্যাগনেট রাজু আলমডাঙ্গা ডাউকী ইউনিয়নের বাদেমাজু গ্রামের চা বিক্রেতা আব্দুল আজিজের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হরিণাকু-ু, মেহেরপুর ও জীবননগর থানায় একাধিক চুরি ও প্রতারণার মামলা চলমান রয়েছে। জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বাদেমাজু গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে রাজু প্রায় দু’বছর যাবৎ আলমডাঙ্গাসহ পাশ্ববর্তী জেলায় চুরি ও ম্যাগনেট পাওয়ানোর স্বপ্ন দেখিয়ে বিভিন্ন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।প্রতারণার শিকার আলমডাঙ্গার ফরিদপুর গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে রুহুল আমিন একজন বেকারী ফুড বিক্রেতা। রাজুর পিতার চায়ের দোকানে প্রতিদিনের ন্যায় গত কয়েক মাস পূর্বে দোকানে বিস্কুট বিক্রয় করতে যায়। সেই দোকান থেকে তাদের দু’জনের পরিচিতি হয়। এরই মধ্যে রাজু বেকারী বিক্রেতা রুহুল আমিনকে বলে, আমার কাছে জ্বিন আছে এবং জ্বিনের মাধ্যমে অনেক কিছু এনে দিতে পারি। ঘটনার এক সপ্তাহ পড়ে রাজুর সাথে রুহুল আমিনের আবারো দেখা হলে, সে বলে রুহুলের বাড়ির পেছনের পুকুরের মধ্যে ম্যাগনেট আছে যার মূল্য ৫ কোটি টাকা। এই লোভে রুহুল আমিন রাজুর খপ্পরে পড়ে বলে, ম্যাগনেট পাওয়ার জন্য কি করতে হবে। রাজু রুহুল আমিনকে পুকুরে ম্যাগনেট আছে এই ঘটনাটি কেউ যেন না জানে বলে নিশেধ করে। পরে রাজু কৌশলে বাদেমাজু গ্রামের মৃত খোয়াজ শেখের ছেলে দুদু, জাহান বক্সের ছেলে উজ্জল, নাজির উদ্দীনের ছেলে শহিদুল ও পাঁচলিয়া গ্রামের মিলনকে তাদের ম্যাগনেট সিন্ডিকেটের সদস্য বানিয়ে ফেলে। এর পরেই তাদের শুরু হয় ম্যাগনেট উদ্ধারের অভিযান। প্রায় ৭মাস পূর্বে রাজু তাদের ৫ জনকে বলে রাত ৪টার দিকে পুকুর পাড়ে হাজির হয়ে পূর্ণিমার রাতে ম্যাগনেট উদ্ধার করতে হবে এবং ম্যাগনেট পাওয়ার জন্য ২১ কেজি গরুর দুধ প্রয়োজন। দুধ দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে জ্বিনের আত্মসিদ্ধের জন্য পুকুরের ঢালতে হবে, যাতে করে জ্বিনের বাদশাহ কোন প্রকার বাধা না দিতে পারে। সেই পূর্ণিমার রাতে ২১ কেজি গরুর দুধ রুহুল আমিনের পুকুরে ঢেলে পানিতে নেমে রাজু একটা কাসার থালা উদ্ধার করে বলে এটা ম্যাগনেট। এই ম্যাগনেটটি রুহুল আমিনের বাড়িতে রাখে। রুহুল আমিনকে সতর্ক করে বলে, তোমার পরিবারের কোন লোকজন যেন এই ম্যাগনেট সম্পর্কে না জানে।ম্যাগনেট উদ্ধারের পরে তাদের বলে, বিদেশ থেকে কোটি টাকা নিয়ে এই ম্যাগনেট নিয়ে যাবে। ৫ কোটি টাকার লোভে আত্মহারা হয়ে পড়ে সবাই। এই ঘটনার কয়েক দিন পরে তারা ৫ জন ঢাকায় ম্যাগনেট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। ঢাকায় প্রতারণার মধ্য দিয়ে রাজু গোপনে বিদেশিদের নিকট ম্যাগনেট বিক্রয় করে দু’টি চেক নিয়ে আসে। দুটি চেকে ১ চেকে ৩ কোটি আরেকটিতে কোটি টাকার মূল্য লিখে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরে আসে। ঢাকা থেকে ফিরে একদিন রাতে তাদের কাছে বলে, কোটি টাকা পেতে হলে তোমাদের কিছু টাকা দিতে হবে, টাকার লোভে রুহুল আমিনের কাছ থেকে ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা, দুদুর নিকট থেকে ৭৭ হাজার টাকা, উজ্জলের নিকট থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ও মিলনের নিকট থেকে ৯৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরই মধ্যে একদিন রাতে রাজু তাদের টাকার ব্যাগ নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে এসে দু’টি ব্যাগ দেয় আর বলে, বাড়িতে গিয়ে খুলতে। তারা সবাই বাড়ি ফিরে সকালে ব্যাগ খুলে দেখে ব্যাগের মধ্যে সাদা কাগজ টাকার মতো কেটে পিন মারা। এই দেখে তাদের মাথায় বাজ পড়ে। পরে তারা রাজুকে খোঁজ করলে জানতে পারে, সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতারণার শিকার রুহুল আমিন বলেন, আমি গরু ও জমি বিক্রয় করে টাকা দিয়েছি। টাকার লোভে অন্ধ হয়ে আজ পথে বসে গেছি। ব্যবসা না করতে পেরে না খেয়ে মরার মত অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে।এ ঘটনায় প্রতারক রাজুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে সম্ভব না হলে, রাজুর মা এই ঘটনার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে। এই ঘটনায় প্রতারণার শিকার ৫ জন আলমডাঙ্গা থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।