মুজিবনগরে প্রতিবন্ধী খুদিকে নিয়ে বৃদ্ধা হালিমার অমানবিক জীবনযাপন
যত দ্রুত সম্ভব তাদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেন ইউএনও উসমান গনী
নিউজ ডেস্ক:জমি নেই, ঘর নেই। প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বাঁশতলায় অমানবিক জীবনযাপন করছেন বৃদ্ধা মা। এমনই এক করুণ দৃশ্য চোখে পড়েছে মুজিবনগর উপজেলার নাজিরাকোনা গ্রামে। বৃদ্ধা মা হালিমা খাতুন ও ৪৫ বছর বয়সী তাঁর ছেলে খুদি। শায়েস্তা খান নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন গর্তের পাশের জায়গায় বাঁশতলার নিচে একটি ছোট কুঁড়ে ঘরে সাপ-ব্যাঙ-পোকামাকড়ের সঙ্গে অনেক কষ্টে বসবাস করছেন তাঁরা। ঘরের পাশেই গর্ত। কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে গর্ত বোঝায় হয়ে উথলে উঠেছে পানি। আর কিছু দিন বৃষ্টি হলে তাঁদের ওই কুঁড়েঘর ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারিভাবে ভূমিহীনদের মধ্যে জমি ও ঘর দেওয়া হলেও একটি ঘর কিংবা এক টুকরো জমি জুটছে না তাঁদের কপালে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের দেওয়া বৃদ্ধা মায়ের নামে বয়স্ক ভাতার কার্ডের মাসিক ৫০০ টাকা ও প্রতিবেশীদের সাহায্যে কোনো রকম খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটে তাঁদের। বাস্তবতার চিত্র দেখে বোঝা যায়, কতই না কষ্টে আছেন তাঁরা।জমি নেই, ঘর নেই। প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বাঁশতলায় অমানবিক জীবনযাপন করছেন বৃদ্ধা মা। এমনই এক করুণ দৃশ্য চোখে পড়েছে মুজিবনগর উপজেলার নাজিরাকোনা গ্রামে। বৃদ্ধা মা হালিমা খাতুন ও ৪৫ বছর বয়সী তাঁর ছেলে খুদি। শায়েস্তা খান নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন গর্তের পাশের জায়গায় বাঁশতলার নিচে একটি ছোট কুঁড়ে ঘরে সাপ-ব্যাঙ-পোকামাকড়ের সঙ্গে অনেক কষ্টে বসবাস করছেন তাঁরা। ঘরের পাশেই গর্ত। কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে গর্ত বোঝায় হয়ে উথলে উঠেছে পানি। আর কিছু দিন বৃষ্টি হলে তাঁদের ওই কুঁড়েঘর ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারিভাবে ভূমিহীনদের মধ্যে জমি ও ঘর দেওয়া হলেও একটি ঘর কিংবা এক টুকরো জমি জুটছে না তাঁদের কপালে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের দেওয়া বৃদ্ধা মায়ের নামে বয়স্ক ভাতার কার্ডের মাসিক ৫০০ টাকা ও প্রতিবেশীদের সাহায্যে কোনো রকম খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটে তাঁদের। বাস্তবতার চিত্র দেখে বোঝা যায়, কতই না কষ্টে আছেন তাঁরা।সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হালিমা খাতুনের স্বামী অনেক আগেই মারা গেছেন। তাঁর তিন ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট খুদি। বিয়ের পর মেয়েটি এখন স্বামীর সংসার নিয়ে ব্যস্ত। ছেলেরা ব্যস্ত সবাই নিজেদের নিয়ে। কেউ খোঁজ রাখেন না তাঁদের গর্ভধারিণী মা ও ছোট ভাইয়ের। একসময় ছোট ছেলে খুদিই তাঁর মা হালিমাকে দেখাশোনা করতেন। কিন্তু বছর খানেক আগে মাঠে কাজ করতে যেয়ে নসিমন থেকে পড়ে গিয়ে অক্ষম হয়ে যান তিনি। আজ আর চলাফেরার শক্তি নেই তাঁর। সারা দিন শুয়ে থেকেই তাঁর দিন কাটে। তাঁর নামে ভিটাজমিসহ যেটুকু জমি ছিল, সবকিছুই বিক্রি করে দিতে হয়েছিল চিকিৎসার জন্য। কিন্তু তাতেও তিনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। ভিটাজমি-ঘরবাড়ি বিক্রির পর হয়ে গেছেন পুরোই নিঃস্ব। স্বয়সম্বল বলতে ছেলের কাছে মা আর মায়ের কাছে ছেলে ছাড়া কিছুই নেই। পরে তাঁদের এ কষ্টকে কিছুটা নিবারণ করতে একই গ্রামের শায়েস্তা খান নামের এক ব্যক্তি তাঁর জায়গায় থাকার একটু ব্যবস্থা করে দেন। শায়েস্তা খানের দেওয়া জায়গায় তাঁরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন কোনো রকম। আর বৃদ্ধা মায়ের বয়স্ক ভাতার কার্ডের টাকা ও প্রতিবেশীদের দেওয়া দানের টাকায় কোনো রকম খেয়ে-না খেয়ে বেঁচে আছেন তাঁরা।স্থানীয় মুজিবর খাঁ বলেন, ‘এদের এত কষ্ট দেখে আমাদেরও খুব খারাপ লাগে। আমরা নিজেরাই গরিব ঘরের সন্তান, তাই আমরাও পারি না ভালোভাবে সাহায্য করে তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে। যে যেমন পারে, তেমনভাবে সাহায্য করে তাদের কোনো রকম আহারটা জুটিয়ে দিচ্ছি। আমরা চাই, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুদৃষ্টি দিয়ে তাদের বসবাস ও তিন বেলা ডাল-ভাতের একটা ব্যবস্থা করে দিক।’জমিদাতা শায়েস্তা খান বলেন, ‘তাদের এই কষ্টের কথা জানতে পেরে আমার জায়গায় তাদের থাকার কথা বলি। তারপর তারা সেখানে চারদিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে মাথার ওপর বস্তা টাঙিয়ে বসবাস করছে। তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। কিন্তু এভাবে তাদের কত দিন চলবে? তবে সরকার যদি তাদের পুনর্বাসন করে দিত, তাহলে তাদের জন্যে খুবই ভালো হত বলে আমি মনে করি। এতে তারা একটু সুখের মুখ দেখতে পারবে।’ এ প্রসঙ্গে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উসমান গনী বলেন, ‘এই বিষয়টা আমার জানা ছিল না। তা ছাড়া এ বিষয়ে কেউ আমাকে কিছু জানায় নি। তবে যদি এ ধরনের কোনো সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব তাদের পুনর্বাসন করা হবে।’