নিউজ ডেস্ক:
পৃথিবী আর কতদিন সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। কিন্তু পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দন পুরোপুরি থেমে যাওয়ার আগে পর্যন্ত কোন প্রাণী টিকে থাকবে, সে কথা এখনই হলফ করে বলতে পারেন তারা। মাত্র আধ সেন্টিমিটার লম্বা এক আটপেয়ে প্রাণী, নাম টার্ডিগ্রেড, সে-ই হবে পৃথিবীর শেষ প্রাণী। চলতি কথায় এদের বলা হয় ‘ওয়াটার বিয়ার’ বা ‘জলভালুক’।
১৭৭৩ সালে এই প্রাণীটির কথা প্রথম জানা যায়। ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত সইতে পারে তারা। ৩০ বছর খাদ্য বা পানীয় ছাড়া দিব্যি বেচে থাকতে পারে তারা। হিমশীতল পাহাড়চূড়া থেকে শুরু করে সমুদ্রের অন্ধকার তলদেশ পর্যন্ত সর্বত্র টিকে থাকবে এই আশ্চর্য প্রাণী।
সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক দল পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্তে এসেছেন, আগামী ১০০০ কোটি বছরেও এই প্রজাতির বিপন্ন হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। এমনকী, পৃথিবী যখন ধ্বংসের মুখোমুখি হবে, তখনও এদের সহজে ক্ষতি হবে না।
গবেষক রাফায়েল আলভেস বাতিস্তা জানান, ‘‘শুধু মানব সভ্যতা নয়, আমরা দেখতে চেয়েছি এই গ্রহ থেকে প্রাণের চিহ্ন ধ্বংস হওয়ার চরম মাত্রা কোনটা। আমরা উত্তর পেয়ে গিয়েছি। টার্ডিগ্রেডকে ধ্বংস করতে পারাটাই সেই চরম মাত্রা। ’’
পৃথিবীর শেষ দিন বা ‘ডুমস ডে’ নিয়ে জল্পনা চলে আসছে সেই প্রাচীনকাল থেকে। পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে প্রলয়ের উল্লেখ তার প্রমাণ। পরমাণু বিস্ফোরণ হোক বা কোনও গ্রহাণুর সঙ্গে ধাক্কা যে ভাবেই নেমে আসুক সেই ভয়াবহ দিন, টার্ডিগ্রেডরাই শেষ পর্যন্ত লড়বে। সূর্য ফুরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের টলানো যাবে না।
গবেষকদের দাবি, নেহাতই টেকনোলজি রক্ষা করছে তাই, না হলে মানুষ খুবই স্পর্শকাতর প্রাণী। টার্ডিগ্রেডের মতো না হলেও অনেক প্রাণীই আছে, যারা সহজে লুপ্ত হবে না। কাজেই তারা একমত, মানব সভ্যতা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবার বহু পরেও পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব বজায় থাকবে।