নিউজ ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম ও মো. গিয়াসউদ্দিনকে ঢাকায় তলব করা হচ্ছে। দলের চেয়ারপারসনের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে।
সূত্র বলছে, দু’একদিনের মধ্যে তাদের বিএনপির গুলশান অফিসে ডেকে পাঠানো হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাদের কাছে কেন্দ্রের বার্তা পাঠানো হয়েছে। বলা হচ্ছে এ সাক্ষাতের সময় ২৬ থেকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে হতে পারে।
এর আগে নাসিকের ১৭৪টি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের সঙ্গেও কথা বলবে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটি। নারায়ণগঞ্জ শহর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ- এ তিন ভাগে ভাগ করে তাদের ডাকা হবে। এছাড়া বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি গোপনীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করে তা চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হবে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি জানায়, কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ভোটের দিনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পোলিং এজেন্টদের কাছে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উপস্থাপন করবে। এর মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে পোলিং এজেন্টদের যে গাইডলাইন দেয়া হয়েছিল, সেভাবে স্থানীয় নেতারা সমন্বয় করেছিলেন কিনা, কিংবা পোলিং এজেন্টরা সেভাবে দায়িত্ব পালন করেছে কিনা। ভোট শুরু থেকে ফলাফল পর্যন্ত তারা কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক ছিলেন কিনা। সকালে সিরিয়ালসহ ব্যালট পেপার বুঝে নেয়া এবং ভোট গ্রহণ শেষে কাস্টিং হওয়ার মোট ভোটের সঙ্গে তা মিলিয়ে নিয়েছেন কিনা।
এরপর ভোট গণনা শেষে প্রিসাইডিং অফিসার স্বাক্ষরিত ফলাফল শিট বুঝে নিয়েছিলেন কিনা। প্রতিটি কেন্দ্রে গৃহীত ভোট ও ঘোষিত ভোটের সংখ্যা মেলানো হয়েছে কিনা। ভোট গণনার সময় প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের সামগ্রিক কার্যক্রম যথাযথভাবে মনিটরিং করা হয়েছে কিনা। ভোট কেন্দ্রে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তা নজরে আসার পর কেন্দ্রে বা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের অবহিত করা হয়েছিল কিনা। ভোট গণনার আগে টিভি স্ক্রলে যাওয়া ফলাফলের বিষয়ে স্থানীয় নেতারা পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কিনা।
পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব দেয়ার পরও কেন তারা অনেক কেন্দ্রে অনুপস্থিত ছিলেন, সে ব্যাপারেও জানতে চাওয়া হবে। সর্বোপরি কেন্দ্র থেকে মনিটরিং করার জন্য যাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, তিনি কীভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। স্থানীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়ে কোনো পোলিং এজেন্ট প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে না চাইলে গোপনে লিখিত বক্তব্য দেয়ার সুযোগ থাকবে।
সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকাকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। উল্লিখিত স্থানীয় তিন প্রভাবশালী নেতাকে প্রতিটি থানার বিস্তারিত দায়িত্ব কেন্দ্র থেকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দেয়ার বিষয়টিও ছিল তাদের ওপর ন্যস্ত। সূক্ষ্ম কারচুপি এড়াতে কেন্দ্র থেকে বেশকিছু নির্দেশনাও তাদের দেয়া হয়।