নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইলের পÐিতপুর নিউ কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু রয়েছে কেবল কাগজে কলমে। বাস্তবে কোনো শিক্ষার্থী না থাকলেও কাগজে পত্রে রয়েছে ৮৫ শিক্ষার্থী। কাগজপত্র ঠিকঠাক দেখিয়েই বিদ্যালয়টি সরকারি ও এর ভুয়া চার শিক্ষক ও গেজেট ভুক্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় এমপির অভিযোগ উপেক্ষা করে ৪ শিক্ষক সরকারী হওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নান্দাইলে উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পÐিতপুর নিউ কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ২০১৩ সালে সারা দেশের সাথে এ বিদ্যালয়টিও জাতীয় করণের তালিকা ভুক্ত হয়ে যায়। এর পর থেকে কাগজপত্রে চালু রয়েছে বিদ্যালয়টি। কিন্তু ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ ও এখানে ভুয়া শিক্ষকরা গেজেটভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করায় স্থানীয় এমপি, জমিদাতা পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন গত ২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা সচিবের কাছে একটি অভিযোগ দেন। এতে শিক্ষক শূণ্য ও বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকা অবস্থায় ভুয়া নিয়োগকৃত শিক্ষক গেজেট ভুক্ত না করে সরকারি ভাবে শিক্ষক নিয়োগ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু অভিযোগ আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এদিকে গত ১০ ফেব্রæয়ারি বিদ্যালয়টিতে ঝটিকা সফরে গিয়ে এমপি কোনো শিক্ষার্থী পাননি। একজন শিক্ষক পাওয়া গেলেও তিনি অন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেন নি। তখন গ্রামবাসীর কাছে এমপি জানতে পারেন পাশ^বর্তী বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী এনে এ বিদ্যালয়ের নামে সমাপনি পরীক্ষা দেওয়ানো হয়। ওই অবস্থায় বিদ্যালয়টির জাতীয় করণ বহাল রেখে ৫ জন শিক্ষক সরকারি ভাবে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করে ১২ ফেব্রæয়ারি প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা সচিবের কাছে একটি চিঠি দেন সাংসদ। কিন্তু সেটিও আমলে না নিয়ে গত ১২ জুলাই বিদ্যালয়ের কাগজপত্রে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল হক, সহকারী শিক্ষক শিপা আক্তার, আফজালা, লুৎফুন্নেছাকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে আদেশ জারি হয়। বিষয়টি জানতে পেরে এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন ১৭ জুলাই প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রী বরাবর আরো একটি আবেদন পাঠিয়েছেন। গেজেটভুক্ত চার জন ভুয়া নিয়োগকৃত শিক্ষকের গেজেট বাতিলের জন্য আবেদনটি করা হয়। গুটি কয়েক স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি তড়িঘড়ি করে ভুয়া নিয়োগকৃত শিক্ষক দিয়ে কাগজে কলমে বিদ্যালয়টি চালু দেখিয়ে জাতীয় করণের তালিকা ভুক্ত করে। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা সচিব বরাবর লিখিত ভাবে জানানো হলেও অভিযোগ আমলে না নিয়ে সাংসদ ও উপজেলা পরিষদের অজ্ঞাতে একটি অসাধু চক্র চারজন শিক্ষকের নাম গেজেট ভুক্ত করে। ওই অবস্থায় বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ ঠিক রেখে ভুয়া শিক্ষকদের নাম গেজেট থেকে বাতিল করে সরকারি ভাবে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয় প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রীকে। নান্দাইল প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক জানান, চার জন শিক্ষককে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার একটি আদেশ তিনি পেয়েছেন। বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।