নিউজ ডেস্ক:
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে এক ইউএনও ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিল এমন দুজনকে ধরা হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ।দিনাজপুরে ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম এবং তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় যে চারজন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে দুইজন সরাসরি হামলায় সম্পৃক্ত ছিল বলে জানিয়েছেব র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক আশিকা বিল্লাহ।
তবে তাদের নাম তিনি এখনই প্রকাশ করেননি। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে রংপুর র্যাবের কার্যালয়ে এখনো ওই চারজনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে তিনি জানান।গত বুধবার মধ্যরাতে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি ভবনে ঢুকে হামলা চালায় দুষ্কৃতিকারীরা।ঘটনার পর পর তদন্তে নামে র্যাব ও পুলিশের যৌথ দল। বৃহস্পতিবার দিনাজপুর ডিবি গোয়েন্দা পুলিশ ইউএনও’র বাসভবনের নৈশ প্রহরী পলাশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
এরপর তারা গোপন খবরের ভিত্তিতে ঘোড়াঘাট থেকে জাহাঙ্গীর ও মাসুদ রানা নামে আরো দু’জনকে আজ ভোরে সন্দেহভাজন প্রধান আসামি আসাদুল হককে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নৈশ প্রহরী পলাশ ছাড়া বাকি তিনজনকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়। তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।ঘটনার তদন্তে এর মধ্যে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে এরইমধ্যে রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলায় ইউএনওদের নিরাপত্তায় ১০ জন করে অস্ত্রধারী আনসার সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।এই ঘটনার পেছনে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এদিকে এই ঘটনার পর বেরিয়ে আসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া জাহাঙ্গীর আলম যুবলীগের আহ্বায়ক, আসাদুল হক যুবলীগের সদস্য এবং মাসুদ রানা ঘোড়াঘাট সিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা।এরমধ্যে দিনাজপুর জেলা যুবলীগ মাসুদ রানাকে বহিষ্কার করেছে এবং কেন্দ্র থেকে বাকি দুইজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হয়রানি, মাদক সেবনের অভিযোগ আনায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান, দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ পারভেজ।তিনি বলেন, তাদেরকে আর কখনো আওয়ামী লীগের কোনো অঙ্গসংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হতে দেয়া হবে না।
গতকাল এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই।হামলার পর গতকাল ভোরের দিকে ওয়াহিদা খানম এবং তার বাবা ওমর আলী শেখকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে মিসেস খানমকে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল ভর্তি করা হয়।
পরে মিসেস খানমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।গত রাতে প্রায় দুই ঘণ্টা অস্ত্রপচারের পর মিসেস খানমের জ্ঞান ফিরেছে বলে জানা গেছে।অস্ত্রোপচার সফল হলেও এখনো মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে এখনো পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন চিকিৎকরা।