নিউজ ডেস্ক:দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের রুদ্রনগর গ্রামের একটি বাঁশ বাগান থেকে কুড়ুলগাছির হামলাতলাপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলীর ছেলে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কারারক্ষী মিলনকে (২৫) অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। রুদ্রনগর গ্রামের মাঝপাড়ার একটি বাশ বাগান থেকে গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় দামুড়হুদা পুলিশ দ্রুত তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের রুদ্রনগর গ্রামের মাঝপাড়ার জাহিদুলের বাড়ির পিছনে ফরজ ও মগরিবের বাঁশবাগানে ফাঁকা স্থানে একই এলাকার ৮/১০ বছরের কয়েকজন কিশোর খেলা খেলছিলো। এসময় হঠাৎ খেলার স্থানের অদূরে ওই কিশোরগুলি একজন ব্যক্তিকে পড়ে থাকা দেখতে পায়। পরে তারা কাছে গিয়ে হাত-পা বাধা ও মুখে রুমাল ঢুকানো ও গলাই রশি দেওয়া দেখে চিৎকার করে স্থানীয় লোকজনকে খবর দেয়। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে আসে এবং পুলিশকে খবর দেয়। দামুড়হুদা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। পরে ওই ব্যক্তির পরিচয় মেলে, সে একই উপজেলার কুড়–লগাছী ইউনিয়নের কুড়–লগাছী গ্রামের হামতলাপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলীর ছেলে মিলন হোসেন (২৫)। সে বর্তমানে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কারারক্ষী হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।
ঘটনা সম্পর্কে মিলনের পিতা মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, মিলন গত শুক্রবার স্মার্টকার্ড নিতে ছুটিতে বাড়ি আসে এবং গত রবিবার বিকালে কর্মস্থলে ফেরার জন্য রওনা হলে দর্শনা থেকে সন্ধ্যার সময় ৭/৮ জনের একটি দল মিলনকে অপহরণ করে। তিনদিন মিলনের সাথে তার পরিবারের কোন যোগাযোগ ছিলনা, গত মঙ্গলবার রাতে মিলনের কর্মস্থল থেকে তার পরিচিত এক কারারক্ষী মোবাইল ফোনে জানান যে, মিলন এখনো কর্মস্থলে ফেরেনি। পরে আমরা পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খুজাখুজি করতে থাকি। এমতাবস্থায় পরদির বুধবার সকালে এ ঘটনা জানতে পারি। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর অনেকেই বলেছেন বিষয়টি রহস্যজনক।
মিলনের প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, সে দীর্ঘদিন ভারতে বসবাস করে বছর খানেক আগে দেশে ফিরেছে। সে শারীরিকভাবে একটু অস্বাভাবিক। গত ৭/৮ মাস আগে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার কারারক্ষি পদে চাকরি হয়। মিলনের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলীর দুই সংসার, প্রথম পক্ষের ছেলে মিলন। সরকার থেকে পাওয়া বরাদ্দকৃত বাড়িতেই মিলন ও তার মা-বাবা বসবাস করেন। মিলনের পিতার দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানদের সাথে মিলনদের দ্বন্দ্ব রয়েছে।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকুমার বিশ্বাস জানায়, পারিবারিক ও জমিজমা সংক্রান্ত জেরে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারন মিলনের পিতা মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী তার সম্পত্বির পুরোটাই মিলনের নামে লিখে দিয়েছে। তাই আক্রশে দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে মিলনের সৎ ভাই হাসমত আলী ও সৎ ভাগ্নে নাঈম নামে দু’জনকে আটক করা হয়েছে।