স্বামী মামুনকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত
নিউজ ডেস্ক:দামুড়হুদা সদাবরী গ্রামে নিজ স্ত্রীকে হত্যার দায়ে পলাতক স্বামী মামুন আলীকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ জিয়া হায়দার আসামীর অনুপস্থিতিতে এ রায় দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী দামুড়হুদা উপজেলার সদাবরী গ্রামের আবুবক্কর আলীর ছেলে মামুন আলী যৌতুক না পেয়ে তার নিজ স্ত্রী সাগরী খাতুনকে হত্যা করে নাটক সাজান সাগরী পানিতে ডুবে মারা গছে। পরে নিহতের পরিবারের লোকজন বিষয়টা বুঝতে পারলে এই ঘটনার পরদিন নিহত সাগরী খাতুনের পিতা রহিম বক্স বাদী হয়ে দামুড়হুদা থানায় মামুনসহ চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে দামুড়হুদা থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক এসআই আব্দুল মোতালেব সরকার একই বছরের ৩১ মে মামুনকে অভিয্ক্তু করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালিন সময়ে আদালত এ মামলায় মোট ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে অভিযুক্ত মামুনকে মৃত্যুদ- দেন। তবে রায় ঘোষনার সময় আসমি পলাতক ছিলেন।
জানা যায়, যৌতুকলোভী পাষ- মামুন প্রায়ই তার স্ত্রী সাগরী খাতুনকে যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করতো। বার বার টাকার দাবি করা মামুনের অত্যাচারে অসহায় পিতামাতা প্রায়ই মেয়ের সুখের জন্য সত কষ্টের পরও টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন। সাগরী খাতুনকে হত্যার কিছুদিন পূর্বে ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে মামুন। পরে নিহত সাগরীর পিতা উপায় না দেখে ১৫ হাজার টাকা দেয়। আর বাকি টাকা অল্প অল্প করে দিতে চান। এই টাকা নেওয়ার পরও আরো টাকা দাবি করে সে। টাকা না পেলে ঘটনার দিন সাগরীকে হত্যার পূর্বে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায় পাষ- মামুন। এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করে সাগরী খাতুনকে হত্যা করে। পরে নিহতের লাশ পানিতে ফেলে দিয়ে নাটক সাজায় পানিতে ডুবে সাগরীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সে সময় তার সে নাটক বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সময় যত গড়িয়েছে ততটা স্পষ্ট হয়েছে মামুনের অত্যাচারের কাহিনি।
ঘটনার সময় থেকে ৯ মাস পূর্বে দামুড়হুদা সদাবরী গ্রামের আকুব্বার আলীর ছেলের সাথে বিয়ে হয় রহিম বক্সের মেয়ে সাগরী খাতুনের। বিয়ের পর থেকে সাগরীর উপর যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে মামুন। দিন যত গড়িয়েছে ততটায় বেড়েছে এই যৌতুকের চাপ। বরংবার যৌতুকের টাকা দেওয়ার পরও সাগরীর মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে তার কস্টের জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ঘটনার পরদিন নিহত সাগারীর পিতা বাদী হয়ে মামলা করলে দীর্ঘদিন আইনি প্রক্রিয়ার শেষে গতকাল এই আলোচিত মামলার রায় দিয়েছে আদালত।
এদিকে দীর্ঘদিন মামলার কার্যক্রম শেষে হত্যাকারী ঘাতক মামুনের মৃত্যুদ-ের রায় হওয়াতে নিহত সাগরীর পরিবারে লোকজনের মধ্যে স্বস্তির ভাব লক্ষ্য করা যায়। এসময় তারা এ রায়ে খুশি হয়ে বলেন, পলাতক মামুনকে দ্রুত আটক করে এ রায় কার্যকর করা সম্ভব হলে তারা আরো খুশি হবেন।