নিউজ ডেস্ক:দর্শনা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সৌখিন জুয়েলার্স নামের একটি দোকানে গভীর রাতে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সোনার গহনা, রুপার গহনা, ওজন মিটার, সিন্দুকসহ প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকার মতো চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। গত সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আবু রাসেলসহ দর্শনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জানাযায়, গত সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দর্শনা-হিজলগাড়ী সড়কের মদন মার্কেটে সৌখিন জুয়েলার্স নামক একটি দোকানে এক দল চোরচক্র হানা দেয়। এ সময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে তালা কাটার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে শার্টার কেটে অভিনব কৌশলে দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে ৮ ভরি সোনা, ৬০ ভরি রুপা, ১টি ওজন মিটার, সিন্দুক, কিছু নগদ টাকা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মোট সাড়ে সাত লাখ টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায় চোর চক্র। এ ঘটনার পর দর্শনা থানার পুলিশের একটি টহল দল দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর এলাকায় টহল দিতে এলে ওই দোকানের শার্টার খোলা দেখতে পায়। পরে টহল দলটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক শ্রী সমারেশ পাত্র বিদ্যুতকে মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে ডাকা হয়। এ সময় মালিক দোকানে এসে দেখেন তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সবকিছু চোর চক্র নিয়ে গেছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক বিদ্যুত সবকিছু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেল, দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান কাজল ও ওসি (তদন্ত) শেখ মাহাবুবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ সময় বেশ কিছু ব্যবসায়ীদের ঘটনাস্থলে ডেকে থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান কাজল বলেন, এত বড় একটি বাজার এখানে ব্যবসায়ী কমিটিও রয়েছে অথচ কোনো নৈশপ্রহরী না থাকায় এ ধরনের বড় চুরির ঘটনা ঘটেছে। ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষার্থে ও চুরি ঠেকাতে বাজারে নৈশ প্রহরীর ব্যবস্থা করতে হবে। কেউ যদি নৈশপ্রহরীর বেতনের টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ জন্য দর্শনা থানার অফিসার হিসেবে ব্যাবসায়ীদের আমার সব রকম সহযোগিতা থাকবে।
এদিকে, চলাচলকারী ভ্যানচালক ও কয়েকজন পথচারী জানান, এ চুরির ঘটনার আগে ওই জুয়েলার্সের সামনে একটি পিকআপ দাঁড়িয়ে ছিল। তবে ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন, ঐ পিকআপটি দোকানটাকে আড়াল করে রাখে। পরে ঐ পিকআপটি চুরি হওয়া মালামাল বহন করে নির্বিঘ্নে পালিয়েছে। এ সময় ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, দর্শনা বাসস্ট্যান্ডে ব্যবসায়ীদের সুবিধার্তে নির্বাচনের মাধ্যমে দুই বছর মেয়াদী একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির মেয়াদ দুই বছর পূর্বে শেষ হলেও নির্বাচন না দিয়েই পূর্বের কমিটি বহাল রয়েছে। পূর্বের কমিটি ক্ষমতা আকড়ে ধরে বসে রয়েছে। বাজারে নিয়োজিত নাইটগার্ডদের সময়মতো বেতন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়। আর বাজারে নাইটগার্ড না থাকার কারণে প্রায়, প্রায় ছোট-বড় চুরির ঘটনা ঘটনায় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাজারে নাইটগার্ড না থাকার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা দায়ী করেছে ব্যবসায়ী কমিটিকে।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান কাজল বলেন, জুয়েলারি দোকানে চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যেই পুলিশি জাল বিস্তার করা হয়েছে। দোষীরা দ্রুত ধরা পড়বে।