নিউজ ডেস্ক:
দক্ষিণ আফ্রিকায় নিজ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সামনে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের বাসিন্দা সোহেল রানা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সময় বিকেল ৫টায় কেপটাউনের রাইলেন এলাকার সামনে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়।
এতে ঘটনাস্থলেই সোহেল রানার মৃত্যু হয়। সোহেল নিহত হওয়ার খবর পরিবার ও এলাকায় পৌঁছানোর পর শোকের ছায়া নেমে আসে। কাজী সোহেলের কাজী তাবিজ নামে আট বছরের এক ছেলে রয়েছে। সেখানে কাজী সোহেল বাঙালি কমিউনিটি নেতা হিসেবে বেশ পরিচিত মুখ ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার গ্রামের আব্দুল জলিল কাজীর ছেলে সোহেল কাজী ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে ১৬ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। এর আগে তার বড় ভাই বাচ্চু কাজী ও সর্বশেষ ছোট ভাই সুমন কাজী ১৫ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। ১৫ বছর ধরে এ তিন ভাই একই সাথে ব্যবসায় করে আসছেন। ১০ বছর আগে সোহেল বিয়ে করে স্ত্রী নিশা আক্তারকে নিয়ে আফ্রিকায় থাকতেন। সেখানে সোহেলের আট বছরের এক ছেলে রয়েছে। গত বুধবার সোহেল আগের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পাশেই সোমালীয়দের কাছ থেকে দুই কোটি টাকায় আরো একটি দোকান ক্রয় করেন।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় তিনি নতুন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে যান। গাড়ি থেকে নেমে দোকানে ঢোকার আগেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে অস্ত্রধারী কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে সোহেলের মাথায় ও পেটে গুলি লাগলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। সন্ত্রাসীরা যাওয়ার সময় এলোপাতাড়ি গুলি চালালে দোকান কর্মচারী আতিকের গায়ে গুলি লেগে মারাত্মক আহত হন। আহত আতিককে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বর্তমানে সোহেলের লাশ দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে তার লাশ আনা হবে। সোহেলের স্বজনেরা জানান, নতুন দোকান কেনাকে কেন্দ্র করেই সোহেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে কাজী সোহেল বাঙালি কমিউনিটি নেতা হিসেবে বেশ পরিচিত মুখ ছিলেন।
তিনি যুব উন্নয়ন পরিষদ কেপটাউনের নেতা হিসেবে সব সমস্যায় প্রবাসীদের পাশে দাঁড়াতেন। ব্যবসায়ী হিসেবেও তার ব্যাপক সুনাম ছিল।
সোহেলের বড় ভাই বাচ্চু কাজী বলেন, আমরা তিন ভাই গত ১৫-১৬ বছর ধরে আফ্রিকায় সুনামের সাথে ব্যবসায় করে আসছি। কী কারণে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে এ মুহূর্তে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।
সোহেলের বৃদ্ধ বাবা হাজী আব্দুল জলিল কাজী কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, যেখানে আমার মরে যাওয়ার কথা সেখানে আমার ছেলেটাকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ শোক আমি সইব কিভাবে।
ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মেহেদী হাসান বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার বিষয়টি আমি এলাকার লোক মারফত শুনেছি। এ মুহূর্তে এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।