হাবিবুল ইসলাম হাবিব, টেকনাফ: টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নে সৈকত উপকুল থেকে আব্দুল গফুর (২৫) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে মডেল থানার পুলিশ। সে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া এলাকার আলী আহমদ ফকিরের ছেলে বলে জানায়। বর্তমানে সাবরাং কোয়াইনছড়ি পাড়া এলাকার বাসিন্ধা বলে জানায়। এ মৃত্যু নিয়ে রহস্য পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে।
জানা যায়, গত ১৫ আগস্ট ভোরে নিহত আব্দুল গফুর সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমের ভাঙা খালে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হন। গতকাল ১৭ আগস্ট বৃহ¯পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় লাশটি সাবরাং হারিয়াখালী সৈকতে ভেসে ওঠে। এদিকে খবর পেয়ে কোস্টগার্ড শাহপুরী স্টেশন কন্টিনজেন্ট কমান্ডার এমএস কবির নেতৃত্বে একটি টহল দল সেখানে উপস্থিত হন। পরবর্তীতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন টেকনাফ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোক্তার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টীম লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
টেকনাফ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মোক্তার হোসেন ভুইয়া জানান, সাবরাং ইউনিয়নের সাগর উপকুল থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ লাশের শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে সাবরাং এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গফুরকে ফিশিং ট্রলারে মাছ ধরতে শাহপরীর দ্বীপ থেকে নিয়ে আসে চাচাতো ভাই শাহপরীর দ্বীপ ডাংগর পাড়ার বাসিন্দা আজগর আলী। তার বাড়ি আসার দুদিন পরেই সাগরে নিখোঁজ হয়ে যান আব্দুল গফুর। তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আব্দুল গফুর ও আজগরের পরিবার পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। নিহতের পিতার দাবি ছেলেকে হত্যা এবং আজগরের দাবি, অসুস্থ অবস্থায় পালিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য খালে ঝাঁপ দেয় গফুর।
এ ব্যাপারে আজগর আলী বলেন, “আমি তাকে মাছ ধরার জন্য সাবরাং থেকে ডেকে নিয়ে আসি। গত ১৪ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে পাগলামি শুরু করে গফুর। তখন তার কান্ড দেখে এলাকার লোকজন জ্বীনের আছর বললে তার আপন বোন মোবারস খাতুনের অনুরোধে ঐ দিন রাতে স্থানীয় কবিরাজের মাধ্যমে চিকিৎসা করি। সে বেশি চটপট করলে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখি। গত ১৫ আগস্ট ভোরে সে শেকল ছিড়ে খালের দিকে দৌঁড়ে যায়, আমরাও তার পিছনে গিয়ে দেখতে পায় সে খালের পানিতে ঝাঁপ দেয়। আমরা একটি নৌকা নিয়ে তাকে উদ্ধার করতে নামতেই নিখোঁজ হয়ে যায় আব্দুল গফুর।”
এদিকে আজগর আলীর বক্তব্যে নিহতের মা জুহুরা খাতুন ও বোন মোবারস খাতুন একমত হলেও ভিন্নমত পোষণ করেছে নিহতের পিতা আলী আহমদ ফকির। পিতার দাবি, তার ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের পিতা আলী আহমদ বলেন, “আমার ছেলের শরীরে রক্তের দাগ দেখেছি। এছাড়া তার হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। আমার ছেলে নিহত হওয়ার প্রকৃত সত্য জানতে চাই।”