স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহে চলমান বছরে সংঘটিত প্রতিটি খুনের রহস্য উন্মোচিত, বন্দুকযুদ্ধ ও খুনসহ ৩১টি লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে ছিনতাইকারীদের হাতে সাইফুল নামে একজন সেনাসদস্য ও পান বিক্রেতা জালাল উদ্দীন ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে, জেলাব্যাপী লাশ উদ্ধার হয়েছে ১০ জনের। খুনের ঘটনা ঘটেছে ১৩টি। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৮ জন ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী। বিভিন্ন থানা ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যমতে কালীগঞ্জে ১০ জন, কোটচাঁদপুরে ১ জন, মহেশপুরে ৪ জন, সদর উপজেলায় ৭ জন, হরিণাকুন্ডুতে ৬ জন ও শৈলকুপায় ৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে ময়না তদন্তে অনেকের অপমৃত্যু ও খুনের আলামত পেয়েছে পুলিশ। জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারী হরিণাকুন্ডুর ধুলে শ্রীপুর গ্রামে শিশু লিথিকে আছার মেরে হত্যা করা হয়। ৪ জানুয়ারী শৈলকুপার ট্রাক ব্যবসায়ী রিয়াজুলকে গুম করা হয়। ৬ জানুয়ারী শৈলকুাপার ত্রীবেনি গ্রামে সেরমি নামে একজনকে হত্যার পর তার ইজিবাইক নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ৭ জানুয়ারী কালীগঞ্জের বেলাট দৌলতপুর থেকে মুন্না নামে এক ব্যক্তির গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ২১ জানুয়ারী কালীগঞ্জের মান্দারতলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ১২ ফেব্রয়ারী মহেশপুরের শ্যামকুড় গ্রামের নিন্দাপাড়ায় ওয়াসিমকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ১৮ ফেব্রয়ারী ঝিনাইদহ শহরের কেসি কলেজের পাশে পান বিক্রেতা জালালকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে ছিনতাইকারীরা। ছাগলে ক্ষেত খাওয়ায় ২৮ এপ্রিল কালীগঞ্জের শিবনগর গ্রামে মিলা দাসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মে মাসে কালীগঞ্জের নরেন্দ্রপুরে ছব্দুল মন্ডল, মোচিক এলাকায় ঢাকালে মামুন, শৈলকুপার বড়দা গ্রামে রফিকুল ইসলাম লিটন, সদরের জাড় গ্রামে ফরিদ, পবহাটী গ্রামে রাজ্জাক ও সাজ্জাদ, মহেশপুরের পুরন্দপুর গ্রামে নুর ইসলাম ও হরিণাকুন্ডুর ভাতুড়িয়া গ্রামে আমরিুল ইসলাম পচা আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। ২১ জুন হরিণাকুন্ডুর বাহাদুরপুর গ্রাম থেকে রিপন ও আওয়ালের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়না তদন্তে তাদের মৃত্যুর কারণ বিষপানে বলে প্রমানিত হয়। ২৮ আগষ্ট সদর উপজেলার পাবর্তীপুর গ্রাম থেকে কলেজ ছাত্র আরিফুলের গলিত লাশ উদ্ধার করে। ময়না তদন্তে আরিফ আত্মহত্যা করেছে বলে প্রমান পায় পুলিশ। ১৪ জুলাই কালীগঞ্জের আগমুন্দিয়া থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৩ জুলাই মহেশপুরের কোদালা নদী থেকে রেহেনা আক্তার ও কোটচাঁদপুরের দোড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে রাশেদা খাুতনের লাশ উদ্ধার করে। ২১ জুলাই মহেশপুরের বেতবাড়িয়া গ্রামে ছেলের লাঠির আঘাতে পিতা মাহাতাব খুন হয়। ১ আগষ্ট ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় ছুরকাঘাত করে মিজানুরকে হত্যা করা হয়। ১৮ আগষ্ট ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামে সেনা সদস্য সাইফুলকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই হত্যা মামলায় তিন আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহন করে। পুলিশের দাবী সাইফুল হত্যা মামলার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধ খুনসহ লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, জেলায় সংঘটিত প্রতিটি খুনের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে। তিনি বলেন বন্দুকযুদ্ধের বিষয়টি ছিল মাদক বা সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের অংশ। এটা আইনশৃংলা অবনতির মধ্যে পড়ে না। তিনি বলেন, যে সব লাশ উদ্ধার হয়েছে তা সড়ক দুর্ঘটনা, অপমৃত্যু বা সাধারণ ঘটনার মধ্যে পড়ে।