নিউজ ডেস্ক : ঝিনাইদহে উদ্বেগজনক হারে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও স্বাস্থ্য সচেতনতা নেই। রাস্তাঘাট, ব্যাংক ও অফিসে কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। পথচারীদের মাস্ক উধাও, থাকলেও থুতনির কাছে ঝুলছে।
ঝিনাইদহ শহরে অধিকাংশ মানুষ মাস্কবিহীন চলাচল করছে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাইদহে নতুন করে ৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে জাহানারা খাতুন (৭০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের হাবিবুর রহমানের স্ত্রী।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি হয়তো এখানেই স্থির থাকবে না। সংক্রমণ যে গতিতে বাড়ছে, তাতে ঝিনাইদহ নিরাপদ থাকবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। সীমান্তের জেলা হওয়ায় ঝিনাইদহ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের পরবর্তী হটস্পট হতে পারে এমন শঙ্কা বাড়ছে। এদিকে, আজ শনিবার থেকে জেলা প্রশাসনের বিধি-নিষেধ কার্যকর হচ্ছে। বিকেল ৫টার পর সব দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
শহরে ইজিবাইক, নছিমন, করিমন ও ভটভটি চলাচলে থাকছে বিধি-নিষেধ। পুলিশ ও জেলা প্রশাসন নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে নামছে।তথ্য নিয়ে জানা গেছে, এ জেলার সাথে ভারতের ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। অনেকেই দালালদের সহায়তায় সীমান্ত রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশে ফিরছেন। শুক্রবারও মিনতি পাল নামে এক নারীকে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় আটক করেছে বিজিবি।
এই নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ৯২৯ জনকে আটক করল বিজিবি। অবৈধ পথে সীমান্ত পথে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান জানান, এ পর্যন্ত ভারত থেকে বৈধ ও অবৈধভাবে আসা ৩৭৯ জনকে স্থানীয় এইড কমপ্লেক্স, পিটিআই ও আজাদ রেস্ট হাউজের কোয়ারেন্টিন রাখা হয়েছিল।
তাদের মধ্যে ৩২২ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। এদের মধ্যে মহেশপুর সীমান্ত থেকে বিজিবির হাতে আটক ৮০ জন এবং যশোর ও চুয়াডাঙ্গা দিয়ে বৈধভাবে আসে ২৮৯ জন ছিল। এদের পরীক্ষার পর ১৬ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ আসে। তাঁদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর ১২ জনের নেগেটিভ হয়েছে। ৪ জন সদর হাসাপাতালে ভর্তি আছে।
বর্তমানে সদরের এইড কমপ্লেক্সে ২৮ জন এবং বিজিবির হাতে আটক ১৬ জনকে মহেশপুর উপজেলার মহিলা কলেজে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। করোনা সংক্রমক বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে মহেশপুর উপজেলার ১টি গ্রাম লকডাউনসহ ৬টি ইউনিয়নে চলাচলে বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে। তা ছাড়া মানুষকে সচেতন করতে প্রতিনিয়ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণের বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ঝিনাইদহ কোভিড হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই আছে। লিকুইড অক্সিজেনও রয়েছে। করোনা মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। তবে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এখনো পর্যন্ত কোনো আইসিইউ নেই বলে তিনি জানান।