নিউজ ডেস্ক:
অতিরিক্ত সংরক্ষণাগারের অভাবে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের ‘সুযোগ নিতে ব্যর্থ’ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশের।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তেলের দাম গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে। গত ২৩ এপ্রিল অপরিশোধিত তেল ব্যারেল প্রতি বিক্রি হচ্ছিল ২০.৪৯ ডলারে।
পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, এটি নয়টি বেসরকারি কোম্পানির কাছে আমদানিকৃত জ্বালানি তেল সংরক্ষণের জন্য ভাড়ার ভিত্তিতে তাদের সংরক্ষণাগারের সুবিধাগুলো ব্যবহারে যোগাযোগ করেছিল। বর্তমানে ওই কোম্পানিগুলো তাদের সংরক্ষণাগারগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র বা শোধনাগার ব্যবসার জন্য ব্যবহার করছে।
বিপিসির পরিচালক (অপারেশন) সৈয়দ মেহেদী হাসান জানান, মাত্র তিনটি কোম্পানি- ইউনাইটেড গ্রুপ, সুপার পেট্রোকেমিক্যাল এবং সিনথেটিক রিগেন তাদের সংরক্ষণাগার ভাড়া দেয়ার ব্যাপারে সরকারের দেয়া প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে।
বিপিসি পরিচালক জানিয়েছেন যে একটি কমিটি করা হয়েছে, যারা খতিয়ে দেখেছেন যে কোম্পানিগুলোর সংরক্ষণাগারগুলো ব্যবহারের পর্যায়ে রয়েছে কি না এবং বিপিসির প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে পারবে কি না।
সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দেয়া তিন কোম্পানির ১ লাখ টন পেট্রোলিয়াম জ্বালানি সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে বলেও জানান মেহেদী।
তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধারণক্ষমতার সংরক্ষণাগার রয়েছে ইউনাইটেড গ্রুপের (৫০ হাজার মেট্রিক টন)। অপর দুটির মধ্যে পর্যায়ক্রমে রয়েছে সিনথেটিক (৪৬ হাজার টন) এবং সুপার পেট্রোক্যামিকেল (৭ হাজার ৫০০ টন)।
তবে বেসরকারি পর্যায়ে এভাবে জ্বালানি তেল সংরক্ষণের ব্যাপারটি কোম্পানিগুলো কতটা সুবিধা দিতে পারবে বা কতটা ভাড়া নেবে তার ওপরে নির্ভর করবে বলে জানান বিপিসি কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘ভাড়া এবং সুবিধাগুলো নাগালের মধ্যে থাকলেই কেবল বিপিসি তাদের সংরক্ষণাগারগুলো ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’
বর্তমানে বিপিসির ৯ লাখ ৫০ হাজার টন ধারণক্ষমতার সংরক্ষণাগার রয়েছে, যা দিয়ে দেশের দুই মাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
বিপিসির তথ্য মতে, বাংলাদেশ সরকার বছরে ৫.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে। আর প্রতিদিনের চাহিদা ১৫ হাজার মেট্রিক টন।
কিন্তু করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সরকারি আদেশের সাথে মিল রেখে কারখানা, গণপরিবহন ও বিমান সংস্থাগুলো বন্ধ থাকায় জ্বালানি তেল ব্যবহার ৬০ শতাংশেরও বেশি কমেছে।
সরকারি সূত্র বলছে, বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের সুযোগ নিয়ে বিপিসি কিছু তেল ক্রয় করে কিছু উপকূলীয় অঞ্চলে লাইটারেজে সংরক্ষণের চেষ্টা করছে।
কিন্ত এর জন্য অনেক ব্যয় হওয়ায় বিপিসির জন্য তা খুব একটা ভালো কিছু হবে না বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৬ লাখ ৭৯ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল এবং ৩ লাখ ৩০ হাজার টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে বিপিসি।
একই সময়ে গত বছরে ১ লাখ ৭ হাজার ১০০ টন ডিজেল এবং ৩ লাখ ৬৯ হাজার টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র : ইউএনবি