শ্রমিকসহ দু’জন আটক : মুচলেকায় মিললো মুক্তি
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গায় হর্টিকালচার সেন্টারের দফায় দফায় নার্সারী তত্ত্বাবধায়ককে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় হর্টিকালচার সেন্টারের স্টাফ ও চুক্তিভিক্তিক নিয়োগের অনিয়মিত এক শ্রমিককে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। পরে ক্ষমা চেয়ে লিখিত আবেদন বা মুচলেকায় তাদেরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চুয়ডাঙ্গা হর্টিকালচার সেন্টারে চুক্তিভিক্তিক ‘কাজ আছে, মজুরী আছে, প্রকল্পে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে নূরনবী বেশ কয়েক বছর কাজ করছেন। কিন্তু হঠাৎ করে অনিয়মিত বা অস্থায়ী শ্রমিক নূরনবী গত ২৮ জানুয়ারি থেক ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কাজে অনুপস্থিত থাকেন। ছুটি বাদে কাজে অনুপস্থিত থাকায় হর্টিকালচারের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মান্নান হাজিরা খাতায় নূরনবীকে অ্যাবসেন্ট দেখান। হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখানোই নূরনবী ভীষণ ক্ষেপে যান এবং হর্টিকালচার অফিসে এসে ওই দিনই ৫দিন ছুটি লাগবে মর্মে একটি দরখাস্ত জমা দিয়ে চলে যায়। এর বেশ কিছুদিন পার হলে তারপর নূরনবী আবার কাজে যোগদান করে। ছুটি নেওয়ার পরে যে কয়দিন নূরনবী কাজে আসেননি, তার মধ্যে একদল বহিরাগত দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চুয়ডাঙ্গা হর্টিকালচার সেন্টারে এসে তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মান্নানকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে যায়। তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মান্নান সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানান। এ ঘটনার পরে গতকাল সকালে আবার একজন অপরিচিত ব্যক্তি হর্টিকালচার অফিসে আসেন এবং কর্মরত শ্রমিক নুরনবীর সাথে দেখা করেন। পরে অপরিচিত ওই ব্যক্তি তত্ত্বাবধায়ককে উদ্যোশে করে বিভিন্ন ধরণের বাজে মন্তব্য করাসহ হুমকি-ধামকিমূলক কথাবার্তা বলে অফিস ত্যাগ করে চলে যায়। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানান তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মান্নান। সংবাদ পেয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম নিজে ডিবি টীমকে সাথে নিয়ে হর্টিকালচার সেন্টারে ঘটনার সরেজমিনে যান। এসময় পুলিশ সুপার অস্থায়ী শ্রমিক নূরনবীকে আটকের নির্দেশ দেন। এসময় ডিবি টীম আটক নূরনবীসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হার্টিকালচারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা ইয়াছির আরাফাত ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরে এই ধরনের কাজ ভবিষতে আর করবো না মর্মে লিখিত দিলে নূরনবীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হার্টিকালচারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা ইয়াছির আরাফাতকে ছেড়ে ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা হর্টিকালচার সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মান্নান জানান, সরকারের চুক্তিভিত্তিক ‘কাজ আছে, মজুরী আছে, প্রকল্পে প্রতিদিন ৪শ’টাকা মজুরী হিসেবে হার্টিকালচার সেন্টারে কাজ করে নূরনবী। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কোনো শ্রমিক যদি একদিন কাজে না আসেন তাহলে সেই দিনের মজুরী পাবেন না। কিন্তু নূরনবী গত জানুয়ারী মাসের ২৮ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত কাজে আসেনি। তাই নিয়ম অনুযায়ী তাকে ৪ দিন হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় শ্রমিক নূরনবী আমার ক্ষীপ্ত হয়ে যান এবং আমার কাছে কৈফিয়ত চাই, কেনো তাকে অ্যাবসেন্ট দেখালাম। এবং নূরনবী আমাকে আরো বলেন, হাজিরা খাতায় তাকে অ্যাবসেন্ট করা যাবে না। বরং তাকে আরো ছুটি দিতে হবে। একপর্যায়ে নূরনবীর লোকজন আমাকে বেশ কয়েকবার বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেখালে আমি পুলিশকে বিষয়টি খুলে বলি। পুলিশ সুপার মহোদয় নিজে এসে সব ঘটনা শোনেন এবং দু’জনকে আটক করেন। পরে তিনি বিষয়টি সুন্দরভাবে সমাধান করে দেন।