রাঁধুনি নূরজাহানকে শোকজ : তিন সদস্যের তদন্তটিম গঠন
নিউজ ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের রোগীদের জন্য সরবরাহকৃত খাবারে পঁচা শামুক পাওয়ার ঘটনা উর্দ্ধতন মহলের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। সময়ের সমীকরণ’এ প্রকাশিত সংবাদ দেখে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম। গতকাল বুধবার রাঁধুনি নূরজাহানকে শোকজ করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের টিম গঠন করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম বলেন, রোগীর খাবারে পচা শামুকের বিষয়টি আসলেই খুব ন্যাক্কারজনক। আমরা রাধুনী নূরজাহানকে ডেকে কৈফয়ৎ তলব করেছি। পাশাপাশি তাকে শোকজ করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি) ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭দিনের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। তদন্ত অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিদিন খাবার পরিবেশনের পূর্বে খাবারের ওজন, মান ও খাবার বুঝে নেয়ার জন্য নার্সিং ইনস্টিউটের সুপার ভাইজারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার। সিভিল সার্জনের দৃষ্টিতে এমন ন্যাক্কারজনক একটি ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শামিম কবির উত্তেজিত স্বরে বলেন, ‘তোমার বউয়ের চুল যদি খাবারের ভিতর পড়ে তুমি কি করবে তখন? অতঃপর নিজের প্রশ্নের জবাবে নিজেই বলেন, বকাঝকা করবা তাইতো? আমরাও তাকে ডেকে বকাঝকা করেছি তার পরে ছেড়ে দিয়েছি।’
গত মঙ্গলবার রাতে সদর হাসপাতালের এক রোগীকে খাবার দেয়ার সময় পঁচা শামুকটি খাবারের পাত্রে দৃশ্যমান হয়। ওই সময় থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলেও ভুক্তভোগী রোগী ও তার স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে এসব অনিয়মের অভিযোগ করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের রোগীদের খাবার নিয়ে এই তেলেসমাতী কাজ কারবার চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই; যা দেখার মত কেউ নেই বললেই চলে। দু’দফায় রোগী প্রতি বরাদ্দ বেড়ে ১২৫ টাকা হলেও খাবারের মান বাড়েনি কিঞ্চিৎ। চিকন চালের বদলে দেয়া হয় মোটা চালের ভাত। ডালে মেশানো হয় অতিরিক্ত পানি, মাছ-মাংসের সাইজ নামকাওয়াস্তে। এসবও ঠিকমতো রোগীদের ভাগ্যে জোটে না। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হয় তাদের। হাসপাতালের রান্না ঘর থেকে পাচার হয়ে সরকারি খাবার চলে যায় প্রভাবশালীদের পেটে। ঠিকমত মনিটরিং না থাকায় প্রতিটি বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন দ্বায়সারা ভাব; যা অবাঞ্চিত।