খেলোয়াড়দেরকে ক্যাম্পিংয়ের সব খরচ আমি বহন করব
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেছেন, চুয়াডাঙ্গার ফুটবলের সেই জৌলুস ও ভরা জোয়ার এখন অস্তমিত। এ শহরের ওপর পাঁচটি খেলার মাঠ। সেখানে এখন আর আগের মতো খেলাধুলা বা অনুশীলন হয় না। মাঠগুলো গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ফুটবলের সেই চিরচেনা রূপ ফিরিয়ে আনতে হলে মাঠে এসে নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে জেলা পর্যায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব-১৭ (বালক-বালিকা) উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘এ টুর্নামেন্ট থেকে বাছাইকৃত জেলা দল, যারা খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে খেলবে, সে সব ফুটবল খেলোয়াড়দেরকে ক্যাম্পিং করাতে হবে। ক্যাম্পিং করাতে যে খরচ হয়, আমি তা বহন করব।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে চুয়াডাঙ্গায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট (বালক/বালিকা) অনূর্ধ্ব-১৭ শুরু হয়েছে। খেলায় পাঁচটি বালক ও পাঁচটি বালিকা দল অংশগ্রহণ করছে। এ খেলার দুই বিভাগ থেকে দুটি সেরা একাদশ বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে। এ দুটি দল ভালো খেলে যেন জেলার সুনাম বৃদ্ধি করতে পারে, সে জন্য সবার সহযোগিতার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নবাগত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন থাকলে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার ছেলেরা তিনজন করে মোটরসাইকেলে চেপে দর্শনার দিকে যাবে না। আর যদি যেতে চায়, তাহলে পুলিশ সাধ্যমত বাধা দেবে। আমি চুয়াডাঙ্গায় যোগদান করার আগে চুয়াডাঙ্গার মাদক কারবার ও সেবন বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট থেকে জেনে এসেছি। একই সঙ্গে এ জেলা থেকে মাদক নির্মূল করার পরামর্শও পেয়েছি। আমি সে কথা রাখার চেষ্টা করব। আমার বিশ্বাস এ ধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজনের ফলে যুবসমাজকে কিছুটা হলেও মাদক থেকে বিরত রাখা যাবে।’
এ ছাড়াও বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন ও পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াহ্ ইয়া খান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াশীমুল বারী, আলমডাঙ্গা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন আলী, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুনিম লিংকন, এনডিসি সিব্বির আহম্মেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাইরুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা আমানুল্লাহ আহম্মেদ, ডা. আওয়লিয়ার রহমান, ডিএফের সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের আসন গ্রহণ, পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং জাতীয় পতাকা, ক্রীড়া পতাকা, টুর্নামেন্টের পতাকা, চুয়াডাঙ্গা সদর পৌরসভাসহ চারটি উপজেলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর চমৎকার ডিসপ্লের মাধ্যমে উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি আকর্ষণীয় করে তোলে চুয়াডাঙ্গা সরকারি শিশু-পরিবারের মেয়েরা। চমৎকার পরিবেশনা ছিল আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্র ও চুয়াডাঙ্গা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের। পরে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা সাদা কবুতর এবং টুর্নামেন্টের ফেস্টুন-সংবলিত বেলুন উড়িয়ে ও ফুটবলে কিক দিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্বোধনী খেলায় মুখোমুখি হয় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা একাদশ। খেলার নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে সমতা হলে নিয়মানুসারে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। (৫+৫) ১০ মিনিটের খেলার প্রথমার্ধে ১ গোলে এগিয়ে যায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। ফলে শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা জয়লাভ করে। টিম ম্যানেজার মাহবুল ইসলাম সেলিম ও কোচ মিলন বিশ্বাসের নেতৃত্বাধীন পৌরসভা টিম জয়লাভ করায় পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু সব খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এদিকে, আজ বুধবার একই মাঠে তিনটি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল নয়টায় মুখোমুখি হবে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলমডাঙ্গা উপজেলার বালিকা ফুটবল দল, সকাল সাড়ে ১০টায় মুখোমুখি হবে জীবননগর ও দামুড়হুদা বালিকা ফুটবল দল এবং বেলা সাড়ে ৩টায় মুখোমুখি হবে জীবননগর ও দামুড়হুদা বালক ফুটবল দল।