চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পড় করোনা উপস্বর্গ নিয়ে জাহিদুল ইসলাম (৩০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয় তাঁর। নিহত জাহিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বলদিয়া গ্রামের দাশপাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ বৃহস্পতিবার বিকালে করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে। একই সাথে উক্ত বাড়ি পুলিশি পাহারাই লকডাউন নিশ্চিত করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হিজলগাড়ি বাজারে ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন জাহিদুল ইসলাম। দীর্ঘদিন ধরে তিনি হার্টের অসুখে ভুগছিলেন। তবে কয়েকদিন পূর্বে তিনি ঠাÐা, জ্বরে আক্রান্ত হন। করোনা মহামাড়িতে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হয় তাঁকে। বুধবার থেকে হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় জাহিদুলকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জাহিদুলকে রাজশাহী রেফার্ড করেন। বাড়ি থেকে প্রয়জনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রাজশাহী নেয়া হবে পরিবারের সদস্যদের এমন সিদ্ধান্তে তাঁকে বাড়িতে নেয়া হয়। বাড়িতে নেয়ার ঘন্টা খানেক পর তাঁর মৃত্যু হয়।
বলদিয়া দাশপাড়ার শরিফুল ইসলাম নামে এক প্রতিবেশী বলেন, জাহিদুল দীর্ঘদিন যাবত হার্টের রোগে ভুগছিলো। হাসপাতাল থেকে দেয়া ছাড়পত্রে তার শরীরে করোনা উপস্বর্গের কথা লেখা থাকলেও পরিবারের লোকজন বিষয়টি গোপন করেছে।
হিজলগাড়ী ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই কিশোর বলেন, করোনা উপস্বর্গ নিয়ে একজন মারা গেছেন, এমন সংবাদ পেয়ে বলদিয়া গ্রামে উপস্থিত হয়। এসময় গ্রামবাসী ও স্থানীয় ইউপি সদস্যদের বক্তব্য শুনি। তারপরও মৃত জাহিদুলের পিতার সাথে কথা বলে বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। বাড়ীটি লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে লক ডাউন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নিবার্হী অফিসার সাদিকুর রহমান বলেন, করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়ায় উক্ত বাড়িটি গ্রাম পুলিশ ও হিজলগাড়ি ক্যাম্প পুলিশি পাহারায় লকডাইন নিশ্চত করা হয়েছে। নিহতের নমুনা সংগ্রহে ও দাফন কার্যে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ ও ইসলামী ফাইন্ডেশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উক্ত পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু নিহত ব্যক্তি করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মৃত্যু বরণ করলেও তিনি করোনা আক্রান্ত কী না তা নিশ্চিত নয়। সে কারণে শুধুমাত্র প্রশাসিকভাবে উক্ত বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে। তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামীম কবির বলেন, ঠাÐা, জ্বর ও নিউমোনিয়া নিয়ে বুধবার দুপুরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসে জাহিদুল ইসলাম। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদুলের শরীরে করোনা উপস্বর্গ ঠাÐা, জ্বর পরীলক্ষীত করলে তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখেন। বৃহস্পতিবার সকালে শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পেলে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। হাসপাতাল থেকে যাওয়ার পূর্বে তার নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও নমুনা না দিয়েই পরিবারের সদস্যরা জাহিদুলকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যায়। বেলা ১২ টার দিকে নিজ বাড়িতে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পারি। বিকালে তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে । কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে সংগৃহীত নমুনা পাঠানো হবে।