নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গায় ঘুমন্ত অবস্থায় স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে আলমডাঙ্গার শিশিরদাড়ি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। স্কুলছাত্রীর আত্মচিৎকারে অপহরণকারীরা পালানোর চেষ্টাকালে স্থানীয়দের ধাওয়ায় একজনকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয় এলাকাবাসী। অপহরণের ঘটনায় স্কুলছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার শিশিরদাড়ী গ্রামের জৈনক রাজমিস্ত্রির মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রীর ঘরে ঢুকে মধ্যরাতে ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে অপহরণের চেষ্টা চালায়। স্কুলছাত্রীর চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এলে ৩ অপহরণকারী পালিয়ে যায়। এ সময় ১ জনকে ধরে করে পুলিশে দেন স্থানীয়রা।
অপহরণকারীদের কবলে পড়া স্কুলছাত্রী বলেন, ‘রাতে নিজ বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ করেই দেখি দুজন ঘরের মধ্যে ঢুকে আমার ওড়না দিয়ে মুখ চেপে ধরেছে। আমি চিৎকার করার চেষ্টা করলে তারা গলা চেপে ধরে। নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টায় আমার মুখে থাকা হাত ছাড়িয়ে চিৎকার দিলে মা-বাবা বেরিয়ে আসে। আমাকে তারা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে আমার বাবা বাঁধা দিলে তাকে বিদেশি টর্চ লাইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আমাদের চিৎকারে বাড়ির পাশের লোকজন ছুটে আসে।’
স্কুলছাত্রীর পিতা মাহাবুল হোসেন বলেন, গ্রামের মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় বাড়ি হওয়ার সুযোগে একই গ্রামের মৃত আজিজুল মিস্ত্রির ছেলে সুজন (৩৭) লেল্টুর ছেলে কালাম (৩২), মৃত দাউদ মল্লিকের ছেলে মিন্টু (৩৪), মুজাম আলীর ছেলে আশিক (২৬), গতকাল রাত ১২টার দিকে বাড়িতে ঢোকে। ঘরের দরজা না থাকার সুযোগে ৪ জন ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্কুলছাত্রীর ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে অপহরণের চেষ্টা চালায়।
এ সময় তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এলে অপহরণের উদ্দেশ্যে আসা ৩ জন যুবক পালিয়ে গেলেও সুজন নামের একজনকে আটক করে রাতেই আলমডাঙ্গা থানা পুলিশে দেওয়া হয়। অপহরণকালে বাধা দিতে গেলে ওই স্কুলছাত্রীর পিতাকে বিদেশি টর্চ লাইট দিয়ে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মাসুদুর রহমান জানান, ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে একই গ্রামের হাসিবুলের ছেলে বিপ্লবের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে রাতে দুজনে দেখা করতে যায়। দুজনকে গ্রামের কয়েকজন যুবক দেখে ফেলে। রাতেই ওই যুবকেরা স্কুলছাত্রীর বাড়িতে ঘটনা জানাতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয় এবং স্কুলছাত্রীর পিতা আহত হন। রাতেই একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে তারা। ঘটনাস্থল থেকে স্কুলছাত্রীর প্রেমিক বিপ্লবের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত একাধিকবার তারা মোবাইলে কথোপকথন করেছে বলে কল লিস্টে পাওয়া যায়। এছাড়া স্কুলছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করেছেন।
এ ব্যাপারে বিপ্লবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছে। এছাড়া গ্রামের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও কেউ এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি।