আলমডাঙ্গার সোনাতনপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ
নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জের সোনাতনপুরে ৩য় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ফুসলিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মুদি ব্যবসায়ী খোকনকে গণধোলাই দিয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে জুতার মালা পরিয়ে ঘুরিয়েছে এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের সোনাতনপুর গ্রামের মৃত রশিদ আলীর ছেলে মুদি দোকানদার খোকন আলী (৬০) দীর্ঘ দিন যাবৎ নিজ বাড়িতে মুদি দোকানের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোনাতনপুর গ্রামের দিনমজুর কালুর মেয়ে সোনাতনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী খোকনের দোকানে বিস্কুট কিনতে যায়। মেয়ে বিস্কুট কিনে ফিরতে দেরি হওয়ায় ওই স্কুলছাত্রীর মা খোকনের দোকানে খুঁজতে যান। দোকানে গিয়ে চেয়ারে বসে অনৈতিক কর্মকা-ের দৃশ্য দেখে ফেলেন তিনি। এ সময় ওই স্কুলছাত্রীর মায়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে দোকান থেকে খোকন দৌঁড়ে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তাঁকে আটক করেন। পরে রাতে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে অভিযুক্ত খোকনকে জুতার মালা পরিয়ে পুরো গ্রাম ঘোরানো হয়।
এ ঘটনার বিষয়ে সোনাতনপুর গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মনসের আলী বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই স্কুলছাত্রী বিস্কুট কিনতে খোকনে দোকানে যায়। ফিরতে দেরি হওয়ায় স্কুলছাত্রীর মা খুঁজতে গিয়ে খোকনের দোকানে প্রকাশ্যে অশ্লীল কর্মকা- দেখে ফেলেন। পরে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তাঁকে আটক করেন। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় রাত নয়টার দিকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিচার করা হয়। বিচারে খোকন তাঁর দোষ স্বীকার করেন। পরে বিচারের মাধ্যমে খোকনকে জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ঘুরালো ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার থানায় মামলা করবেন না বলে কমিটিকে জানান ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার। এরপর ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে রাত সাড়ে নয়টার দিকে জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরানো হয়।
এদিকে, জুতার মালা পরিয়ে সাজা দেওয়ায় গ্রামজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। যেই অপরাধ করুক, তাঁর শাস্তির জন্য আইন আছে। আইনলঙ্ঘন করে সমাজের মধ্যে জুতার মালা পরিয়ে সাজা দেওয়ায় এ ঘটনাকে নেতিবাচক বলে দাবি করেন বিশিষ্টজনেরা।
এ ঘটনায় মুন্সিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বলেন, ‘আমাদের নিকট কোনো ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আসেনি। যদি কেউ এ ধরনের অভিযোগ করত, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম।’
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, ধর্ষণের চেষ্টা ব্যাপারে আলমডাঙ্গা থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনাটি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে জুতার মালা পড়িয়ে গ্রাম ঘুরানো এটা আইনলঙ্ঘন। খোকনকে আটকের পরই আসল ঘটনা কী, সেটা জানা যাবে।