জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ছোটভাই মহিবুল ইসলাম ওহিদের ধারালো হাসুয়ার কোপে বোন জোসনা খাতুন (৬০) ও ভাবী জাকিয়া খাতুন (৪৫) নিহত হয়েছেন। একই সময়ে আহত হয়েছেন মেজো ভাই জাহিদ (৫৫) ও আরেক ছোট বোন শামীমা খাতুন (৪৮)। আহতদেরকে প্রথমে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
গতকাল শনিবার বেলা ১১ টার দিকে মেহেরপুরের গাংনীর শানঘাট দাড়িয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা, যৌথবাহিনী, র্যাব ও গাংনী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর মর্গে প্রেরণ করে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শানঘাট দাড়িয়াপাড়ার আজিজ ফরাজির ছেলে জাহিদ ও মহিবুল ইসলাম ওহিদ দুজনই তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে গাংনী শহরে বসবাস করেন। জাহিদের স্ত্রী জাকিয়া গাংনী মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা ও নিহত মেজো বোন জোসনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের আব্দুল আজিজের স্ত্রী।
অপরদিকে মহিবুল ইসলাম ওহিদ শানঘাট পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক। মহিবুল ইসলাম ওহিদ তার পৈত্রিক সম্পত্তির দেড় একর জমির পুকুর জবর দখল করে মাছ চাষ করে আসছিল। শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিরোধপুর্ণ পুকুর ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এক পর্যায়ে ওহিদের কাছে ব্যাগে রাখা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সকলকে একের পর এক কোপাতে থাকে। ঘটনাস্থলেই নিহত হন বোন জোসনা ও ভাবি জাকিয়া খাতুন। আহত হন ভাই জাহিদ ও ছোট বোন শামীমা। ঘটনার পরপরই ঘাতক মহিবুল ইসলাম ওহিদ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয়রা আহত দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। তাদের দুজনেরই অবস্থা আশংকাজনক। এদিকে আপন বোন ও ভাবিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মহিবুল ইসলাম ওহিদকে (৪৮) আটক করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দুই ঘন্টার মাথায় দুপুর আড়াইটার দিকে মেহেরপুর শহরের একটি বাড়ি থেকে গাংনী থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়াও ঘটনার পর মহিবুল পালিয়ে মেহেরপুর শহরের একটি বাড়িতে আত্মগোপন করে। তাকে আটক করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বোন ও ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা করায় সময় মহিবুল ইসলাম ওহিদ প্রতিরোধের শিকার হয়। এতে তার মাথায় জখম হয়। বর্তমানে তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।