নিউজ ডেস্ক:
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কোচিং সেন্টার বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ৮টি সুপারিশ করেছে।
দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রবণ কুমার ভট্টাচার্য আজ বাসসকে জানান, উল্লেখযোগ্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, কোচিং সেন্টারের মালিক বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করবে দুদক। কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে যারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন তাদের বিষয়গুলো দুদক খতিয়ে দেখবে।
তিনি জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান নিশ্চিত করতে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা মনিটরিং কমিটি গঠন করা যেতে পারে বলে সুপালিশমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলির নীতিমালা অনুসারে বদলি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কোনো অবস্থাতেই মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের সংযুক্তির মাধ্যমে প্রশাসনিক কোন পদে বা ঢাকার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদায়ন করা উচিত নয় বলে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়।
তিনি জানান, প্রশ্নপত্র আমূল সংস্কার করা প্রয়োজন: যেমন পরীক্ষায় বহু নির্বাচনি প্রশ্নপত্র সম্পূর্ণ বাদ দেয়া প্রয়োজন। প্রশ্ন হতে পারে বর্ণনামূলক, সৃজনশীল এবং বিশ্লেষণধর্মী।
সরকার প্রণীত কোচিং নীতিমালার বাইরে যে সকল শিক্ষক কোচিং করাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সুপালিমালায় উল্লেখ করা হয়।
শিক্ষক, অভিভাবক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির মধ্যে নিয়মিত মাসিক সভা অনুষ্ঠানের সুপারিশ করেছে দুদক।
শিক্ষাখাতে দুর্নীতি নিরসনের জন্য গতকাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বরাবরে ৩৯টি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছে দুদক। এরমধ্যে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ৮টি সুপারিশ রয়েছে।
এসব সুপারিশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর বরাবরে প্রেরণ করা হয়।
তিনি জানান, রাজধানী ঢাকায় কোচিং বাণিজ্য বন্ধে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যাবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নিয়েছে দুদক। কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজসহ ঢাকা মহানগরের স্বনামধন্য আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।
তিনি জানান, যেসব শিক্ষক একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন বহাল থেকে কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অনৈতিক অর্থ উপার্জন করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হয়েছে।
সাধারণত এ জাতীয় অনৈতিক অর্থ আয়ে কোনো প্রকার ভ্যাট বা ট্যাক্স দেওয়া হয় না। ফলে উপার্জিত অর্থ অনুপার্জিত আয় হিসেবে পরিগণিত হয়। এভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে কমিশনকে।
ইংরেজি ও গণিত শিক্ষকের স্বল্পতা দূর করতে হবে উল্লেখ করে প্রবণ কুমার ভট্টাচার্য বলেন, বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকগণ স্ব-স্ব বিষয়ের বাইরে কোনো ক্লাস নিতে পারবেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকগণ কোচিং বাণিজ্যের স্বার্থে ইংরেজি ও গণিত ডিসিপ্লিনের বাইরের শিক্ষকদের এসব ক্লাস নেওয়ার সুযোগ দিয়ে থাকেন। এ ব্যবস্থার অবসান হওয়া দরকার বলে সুপারিশমালায় উল্লেখ করা হয়।