দামুড়হুদায় মাথাভাঙ্গা নদীর তীর থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি
শামসুজ্জোহা পলাশ, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুরের কাওমি মাদরাসার পিছনে মাথাভাঙ্গা নদীর তীর থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি কুষ্টিয়ার মিরপুর নানার বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে সময় নিখোজ হওয়া দৌলতপুর উপজেলার পিপুলবাড়িয়া গ্রামের মধু খানের মেয়ে ও আমলা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী মিম খানমের বলে পনশ্চিক করেছেন তার পিতা মধু খান।
রোববার (২২ নভেম্বর) দুপুরে দৌলতপুর উপজেলার পিপুলবাড়িয়া গ্রামের মধু খান ও তার স্ত্রঅসহ নিকট আত্নীয়রা দামুড়হুদা মডেল থানায় হাজির হয়ে কঙ্কালের সাথে উদ্ধার হওয়া পোশাক, ভ্যানিটি ব্যাগ ও জেএসির সার্টিফিকেট দেখে তারা কঙ্কালটি তাদের নিখোজ মেয়ে মিমের বলে শনাক্ত করেন।
নিহতের বাবা মধু খান বলেন সাংবাদিক ও পুলিশকে জানান, নিখোঁজের ২ দিন আগে মেয়ে পাশ্ববর্তী মিরপুর উপজেলায় নানা বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে একদিন থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিল মিম। কিন্তু সে আর বাড়িতে ফিরে না আসায় সম্ভাব্য বিভিন্ন আত্নীয় স্বজন বাড়ি খোজাখুজি করেও তাকে না পেয়ে থানায় মেয়ে নিখোঁজের বিষয়টি জানিয়ে জিডি (সাধারণ ডায়রি) করতে গেলে পুলিশ সাধারণ ডায়েরি নেইনি। পুলিশ ও বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদ শুনে (২২ নভেম্বর) দামুড়হুদা থানায় এসে মেয়ের বোরকা, পোশাক ও ভ্যানেটি ব্যাগ দেখে শনাক্ত কঙ্কালটি করি । শেষ পর্যন্ত মেয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি জানতে তো পারলাম। এ বিষয়ে রবিবার মিমের পিতা মধু খান বাদি হয়ে এক জনের নামসহ অজ্ঞাত কয়েক জনকে আসামী করে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলা নাম্বান ৭
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শনিবার নদীর কিনারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাক কঙ্কালের হাড় মাথার খুলি, ভ্যানেটি ব্যাগ, পায়ের জুতাসহ কাপড় চোপড় উদ্ধার করা হয়। ওই দিন সন্ধায় উদ্ধারকৃত কঙ্কালের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডি.এন.এ টেষ্ট করতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানোর প্রক্রিয়া করা হয়।
এছাড়া কঙ্কালের ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা জেএসসির সার্টিফিকেটের ঠিকানায় পুলিশের মাধ্যমে সংবাদ পৌছানোসহ খোজ খবর
ও তদন্ত শুরু করা হয়। সংবাদ পেয়ে আজ রবিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া দৌলতপুরের পিপুলবাড়িয়া গ্রামের মধু খানসহ তার পরিবারের লোকজন থানায় এসে উদ্ধারকৃত বিভিন্ন আলামত দেখে কঙ্কালটি শনাক্ত করে বলেন এটি তাদের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মিম খানমের। পরে তারা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মিমের লাশটি নদী দিয়ে ভেসে আসলে ভ্যানেটি ব্যাগ ও পায়ের জুতা কঙ্কালের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়ার কথা না এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি খালেক সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ এ বিষয়টা আমলে নিয়ে তদন্তকাজ শুরু করেছে। প্রাথমিক ভাবে আমরাও ধারনা করছি লাশটি ভেসে আসেনি। এখানেই কোন এক জায়গায় কলেজ ছাত্রী মিমকে হত্যা করে লাশটি নদীর কিনারে কোথাও পুতে রাখা হয়েছিল। তবে তদন্ত শেষ হলে নিশ্চিত করে বলা যাবে কিভাবে কোথায় হত্যা করা হয়েছিল আর লাশটির কঙ্কালসহ উদ্ধারকৃত আলামতগুলো কি ভাবে এখানে আসলো।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (২১ নভেম্বর) বিকালে দামুড়হুদার উজিরপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তি নদীতে গোসল করতে গিয়ে নদীর তীরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মানুষের হাড় গোড় দেখতে পায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক হযরত আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে মাথার খুঁলি ও হাড় গোড় দেখে থানা পুলিশের খবর দেয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাথার খুলি ও হাড় গোড় উদ্ধারসহ জব্দ তালিকা করে। # #