চুয়াডাঙ্গায় তিন মাস সিলগালা থাকার পর গ্রীন লাইফ মেডিকেল সেন্টারের
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পাশে গ্রীন লাইফ মেডিকেল সেন্টারে আবারও প্রতারণার শিকার হয়েছেন এক রোগী। ডাক্তারের দেওয়া নির্ধারিত টেস্ট না করেই অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই রোগী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শরীরে জ্বরের কারণে চুয়াডাঙ্গা চক্ষু হাসপাতালের সামনে ডা. মো. নাজিমুদ্দিনের কাছে চিকিৎসা নিতে যান এক রোগী। এ সময় চিকিৎসক নাজিমুদ্দিন জ্বরের প্রকৃত কারণ নির্ণয়ের জন্য রোগীকে ‘সিবিসি সেল কাউন্টার’ নামের টেস্ট করে তাঁকে দেখাতে বলেন। ডাক্তারের পরামর্শে ওই রোগী টেস্ট করাতে গ্রীন লাইফ মেডিকেল সেন্টারে যান। মেটিকেল সেন্টারের লোকজন শুধু ‘সিবিসি’ নামের রিপোর্ট করে রোগীর কাছ থেকে ৪ শ টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ওই রোগী গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসক নাজিমুদ্দিনের কাছে গেলে ভুল রিপোর্টের বিষয়টি তিনি বুঝতে পারেন। পরে ভুক্তভোগী ওই রোগী ভুল টেস্টসহ অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে গ্রীন লাইফ মেডিকেল সেন্টারে গেলে ওই মেডিকেল সেন্টারের মালিক আনারুল তাঁকে বলেন, ‘এ রিপোর্টটিই দেখান, এতে না হলে পুনরায় ওই টেস্টটি করে দেওয়া হবে।’
এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে এক সাংবাদিক গ্রীন লাইফ মেডিকেল সেন্টারের মালিক আনারুলকে ফোন দিয়ে ‘সিবিসি সেল কাউন্টার’ টেস্টের জায়গায় আংশিক ‘সিবিসি’ টেস্ট ও অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাঁর ভুল স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ওই রোগী এসেছিলেন, তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রয়োজনে ওই টেস্টটি আবারও করে দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে ডাক্তার নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি নির্ধারিত টেস্ট ছাড়া অন্য টেস্ট করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিনি রোগীকে যে টেস্টটি করতে দিয়েছিলেন, সেটি চুয়াডাঙ্গার সব ডায়গনস্টিক সেন্টারে হয় না। চুয়াডাঙ্গাতে মাত্র কয়েকটি ডায়গনস্টিক সেন্টারে এ টেস্টটি হয়। এ সময় তিনি আরও বলেন, রোগীর শরীরের বর্ণনা অনুযায়ী জ্বরের প্রকৃত কারণ নির্নয় করতে তিনি ‘সিবিসি সেল কাউন্টার’ টেস্টটি করতে দিয়েছিলেন। আর তারা করে দিয়েছে শুধু ‘সিবিসি’। যার ফলে ওই রোগীর শরীরে জ্বরের প্রকৃত কারণ নির্ণয় করতে পারেননি তিনি।
উল্লেখ্য, ভুয়া ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসার নামে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগে গত ২৮ জুন গ্রীন লাইফ মেডিকেল সেন্টারের মালিক ও ভুয়া মেডিসিন বিশেষজ্ঞকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন মোবাইল কোর্ট। একই সঙ্গে সিলগালা করা হয় গ্রীন লাইফ মেডিকেল সেন্টারটি। সে সময় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াশীমুল বারী। এ ঘটনার তিন মাস পর চলতি মাসের ৩ তারিখে মেডিকেল সেন্টারটি পুনরায় খুলে কার্যক্রম শুরু করা হলে আবারও প্রতারণার শিকার হলেন ওই রোগী।