নিউজ ডেস্ক:
কাতারে প্রতারক বাংলাদেশি ভিসা ব্যবসায়ীকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। তার নাম তাজিরুল ইসলাম। দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে ভিসা বিক্রি ও কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ করে আসছিলেন অনেক বাংলাদেশি।
দূতাবাস সূত্র জানায়, সম্প্রতি আট জন প্রবাসী বাংলাদেশ দূতাবাসে এসে অভিযোগ করেন, তাজিরুল তাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছে। এখন কাতারে আসার পর কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি কর্মীদের আইডি তৈরির কোনো পদক্ষেপ নেননি। পাশাপাশি এই কর্মীদের কোনো কাজও দিতে পারেনি তার প্রতিষ্ঠান। এমতাবস্থায় তারা অনিশ্চয়তা ও আর্থিক সংকটে পড়েছেন। দূতাবাসের শ্রমশাখা অভিযোগ তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে দূতাবাসে হাজির হতে বলে।
গত ২৬ জুলাই তিনি দূতাবাসে হাজির হন। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।
দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত তাজিরুলের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তিনি ভিসা বিক্রির পর কাতারে কর্মী আনার কিছুদিন পর আবার তাদের দেশে পাঠিয়ে দেন। এভাবে তার হাতে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সর্বশেষ আটজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আমরা তার কফিল কাতারি নাগরিককেও ডেকেছিলাম। তার সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে।
ড. সিরাজ বলেন, বাংলাদেশ কমিউনিটির আরও অনেকে এমন অবৈধ ভিসা বিক্রি ও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে আমাদের কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব। অনেক ভিসা ব্যবসায়ী দূতাবাসে এসেও বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু আইনের দৃষ্টিতে তারা অপরাধী এবং এদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ বলেন, কাতারে যেসব বাংলাদেশি ভিসা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রেখেছি। এরই অংশ হিসেবে এই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে আরও একজনকে আমরা এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনের হাতে তুলে দিয়েছিলাম।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিসাবাণিজ্য বাংলাদেশি কমিউনিটিতে একটি ব্যধি। এটি যে কোনো মূল্যে দূর করতে হবে। যদিও অনেক ক্ষেত্রে এ ধরণের কেনাবেচা ও প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, কিন্তু আমরা অভিযুক্তকে ডেকে নানাভাবে এর তদন্ত করে সত্যতা খুঁজে বের করছি। তিনি ভিসা কেনাবেচার অবৈধ বাণিজ্য থেকে সবাইকে দূরে থাকার আহ্বান জানান।