নিউজ ডেস্ক:
মহামারি করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) সময়ে এটিকে মোকাবেলা করে টিকে থাকার জন্য গণপরিবহনকে অবশ্যই একটি ‘নতুন স্বাভাবিক’ উপায় বের করতে হবে। উদ্ভুত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে আরো প্রযুক্তি নির্ভর হতে হবে এই খাতকে, যা ভবিষ্যত বিপর্যয় মোকাবেলাতেও সক্ষম।
এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)’র এক নতুন প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে কোভিড-১৯ ও পরিবহনে খাতের দিক নির্দেশনা শিরোনামে প্রতিবেদনটিতে পরিবহন খাতে চলমান মহামারির বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
আজ এডিবি’র প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লকডাউনের কারণে লাখ লাখ মানুষ এ বছর বাড়ি থেকেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। স্কুলগুলো ই-লার্নিংয়ে পরিণত হয়েছে এবং ভোক্তারা অনলাইনের মাধ্যমে খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী কেনাকাটা করছে।
এতে বলা হয়, যেখানে আগে শহরগুলোতে মানুষ পরিবেশবান্ধব, পর্যাপ্ত ও সাশ্রয়ী এই গণপরিবহনগুলোতে ভ্রমণ করত। কিন্তু করোনার ফলে গণপরিবহনগুলো কিছুদিন বন্ধ রেখে পুনরায় চালুর পর এগুলোকে করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এর চেয়ে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছতেই মানুষ সাচ্ছন্দ বোধ করছে।
এডিবি’র নলেজ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট বামবাং সুসান্তনো বলেন, ‘গণপরিবহনের স্বক্ষমতার ক্ষেত্রে দুটি প্রধান সংকট হচ্ছে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং গণপরিবহনের উপর সাধারণ মানুষের নির্ভরতা ফিরিয়ে আনা।’
করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে কঠোর লকডাউনের কারণে অর্থনীতিতে রুগ্ন হয়ে গেছে। অপরদিকে কলকারখানা ও যানবাহন বন্ধ থাকায় এই সময়ে ধোঁয়া ও কাবর্ণ নিঃসরণ না হওয়ায় বায়ু দূষণ হ্রাস পেয়ে অনেক নগরীর আকাশ বাতাস পরিচ্ছন্ন ও নির্মল হয়ে উঠেছে।
তবে নগরগুলোতে লকডাউন পরবর্তী যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বেইজিংয়ের কথা বলা যেতে পারে। চীনের রাজধানীতে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের গোড়ার দিকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের চেয়ে বেশি যানবাহন দেখা গেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, করোনাকালীন লকডাউনের সময়ে বাতাসের মান যেভাবে উন্নতি করেছিল, নগরীগুলোতে ভ্রমণের জন্য কম কার্বন নিঃসরণকারী বিকল্প বাহনের একটি ক্ষীণ সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিমানবন্দর গণপরিবহনগুলোতে চাহিদা ব্যবস্থাপনা পদক্ষেপ ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।
অধিকাংশ দেশের অর্থনীতিতেই গণপরিবহনের একটি বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে। তাই করোনাকালে খাতটির অনুকূলে সরকারের নীতি ও অর্থনৈতিক সমর্থনের প্রয়োজন, যাতে করে গণপরিবনগুলো তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে এবং যাত্রী ও পণ্যসামগ্রী একটি টেকসই উপায়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এটা পরিষ্কার যে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অতিরিক্ত পরিবহন অবকাঠামো ও সেবার ব্যাপক চাহিদা রয়েই যাবে।’