বিপ্লব নাথ (চট্টগ্রাম) : মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে উখিয়ায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে গিয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। এরপর তিনি শরণার্থীদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করবেন।
এর আগে সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এক ঘণ্টার মাথায় তিনি কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। পরে সেখান থেকে সড়কপথে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে যান প্রধানমন্ত্রী।
সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, পূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ ইকবালুর রহিম, কক্সবাজার-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন নদভী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলম, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পর সার্কিট হাউজে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে চারটার আগে কক্সবাজার ত্যাগ করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
গত ২৪ অগাস্ট রাতে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে হামলার ঘটনার পর থেকে রোহিঙ্গাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশ। একের পর এক জ্বালিয়ে দেয়া হয় রোহিঙ্গাদের ঘর। এছাড়া হত্যা করা হয় বহু রোহিঙ্গাকে। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে ছুটে আসেন বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে। তাদের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকের আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই হলেও অনেকেই মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী তার সফরকালে কাছ থেকে রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখবেন এবং তাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করবেন।
গত কয়েক দশক ধরে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশে এই দফায় আরও তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বলে ইতোমধ্যে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এই শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বার বার আহ্বান জানানো হলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক হিসেবে মেনে নিতেও তারা রাজি নয়।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্ব দিয়ে নিরাপদে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপ দেওয়ার একটি প্রস্তাব সোমবার বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।