নিউজ ডেস্ক:
নির্ভয় ঠাক্কার। ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে জন্ম নেওয়া পনেরো বছর বয়সি এক বিস্ময় বালক। তার বয়সি ছেলেরা যখন হাইস্কুলের গণ্ডি পেরোনোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টায় লিপ্ত, তখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চতর শিক্ষার স্বপ্নে ধাবমান। মাত্র পনেরো বছর বয়সে সে গুজরাট প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জিটিইউ) থেকে তড়িৎকৌশলে বি.ই (স্নাতক) ডিগ্রি অর্জন করেছে।
অথচ লেখাপড়াতে মন ছিল না নির্ভয়ের। তার মন পড়ে থাকতো ফুটবল মাঠে, দাবার গুটিতে কিংবা সাঁতার কাটাতে। এমনকি সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন তার গায়ে লেগে যায় খারাপ ছাত্রের তকমা। লেখাপড়ায় ছেলের এই করুণ হাল দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন নির্ভয়ের প্রকৌশলী বাবা ধবল ঠাক্কার। যে করেই হোক ছেলেকে লেখাপড়ায় ফিরিয়ে আনতে হবে- এই চিন্তায় চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।
নিজেই ছেলেকে শিক্ষাদান শুরু করেন। গতানুগতিক তত্বীয় শিক্ষা পদ্ধতি এড়িয়ে তিনি নির্ভয়কে দেখা, শোনা এবং প্রায়োগিক এই তিন পদ্ধতির সমন্বয়ে ভিন্ন পদ্ধতিতে শিক্ষা দেন। এতেই পাল্টে যায় নির্ভয়ের জীবন। এরপর শুধুই বিজয়ের গল্প। ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এক্সামিনেশন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়নে মাত্র ছয় মাসে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ শেষ করে সে। একাদশ ও দ্বাদশ আরও কম সময়ে। মাত্র তিন মাসে।
তবে বিপত্তি বাধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়। গুজরাট প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে হাল ছাড়েননি নির্ভয়ের বাবা-মা। তারা সর্বভারতীয় কারিগরি শিক্ষা কমিশনে আবেদন করেন। তাদের আবেদনকে আমলে নিয়ে জিটিইউ কর্তৃপক্ষ নির্ভয়কে বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে এসএএল প্রকৌশল কলেজে ভর্তি করে নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলোতেও সফলতার পরিচয় দিয়েছে নির্ভয়। সবাইকে আবাক করে দিয়ে মাত্র আটান্ন সপ্তাহ (এক বছর দেড় মাস) সময় নিয়ে সে তার স্নাতক কোর্স শেষ করেছে এবং জিটিইউ এর ইতিহাসে সে এখন সর্বকনিষ্ঠ স্নাতক ডিগ্রীধারী।
নির্ভয়ের এই সফলতা সম্পর্কে প্রকৌশল কলেজের প্রিন্সিপাল ড.রুপেশ ভাসানী বলেন, ‘নির্ভয় এখানে বিশেষভাবে প্রস্তুত ক্রেডিট সিস্টেম কারিকুলামে তার কোর্স শেষ করেছে। সে দিনে নয় ঘন্টা কলেজে কাটাতো এবং সফলতার সাথে তার কোর্স শেষ করেছে।’
স্নাতক শেষ করে এখন উচ্চতর শিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে পনেরো বছর বয়সি এই বিস্ময় বালক। ভবিষ্যতে তার স্বপ্ন কম খরচে এবং অল্প বাতাস কাজে লাগিয়ে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন।