সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন নেতারা। তবে, নীতিনির্ধারকদের মতে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাষ্ট্রসংস্কার করে সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচন দেওয়া।
এই প্রথম বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও তাদের কার্যক্রম নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। বৈঠকের শুরুতে কমিটির নতুন দুই সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ ও এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে অভিনন্দন জানানো হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করছে, ধ্বংস করে ফেলা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতে সংস্কার প্রয়োজন। এ জন্য যৌক্তিক সময় পর্যন্ত সব ধরনের সহযোগিতা সরকারকে করবে তারা।
বৈঠকে নেতারা বলেছেন, বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা দিয়েছিল। সেই মোতাবেক অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার করছে। সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই সংস্কার করতে হবে। ব্যাপকভাবে সংস্কারের পর রাজনৈতিক মতৈক্যের ভিত্তিতে নির্বাচিত সরকারই আগামী দিনে দেশকে এগিয়ে নেবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, সরকারকে সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে। তাদের কোনো কাজের বিষয়ে এখন নেতিবাচক মন্তব্য করা হবে না।
বৈঠক সূত্র জানায়, আগে সরকারের কাছে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার দাবি করলেও এখন সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে বিএনপি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সরকারকে সময় দেওয়া হবে। তবে সেই সময় ঠিক কত দিন তা স্থির হয়নি। পরিস্থিতি অনুযায়ী তা ঠিক করা হবে।
বিএনপি আপাতত সরকারের কাছে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাবে। সরকারকে সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস থাকবে তাদের বক্তব্যে। গতকাল এক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সরকার এসেছে। তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করে জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া। তবে যে জঞ্জাল আওয়ামী লীগ সরকার রেখে গেছে, তা দূর করতে অবশ্যই কিছু সময়ের দরকার। একটি সঠিক, সুন্দর নির্বাচন করতেও সময়ের দরকার। সেই সময় অবশ্যই এ দেশের মানুষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দেবে।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ১১ দিনে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব। বৈঠকে আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। দিনটি উপলক্ষে কর্মসূচি কয়েক দিনের মধ্যে ঘোষণা করবে দলটি।
এ ছাড়া পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) বিদ্রোহের সময় ঘটা হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত চেয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির দাবি তোলার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।