নিউজ ডেস্ক:
একাত্তর সালে ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি বাহিনীর সামরিক অভিযানে নির্মম ও ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের স্মরণে দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে জাতীয় সংসদ। ফলে ২৫ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের পাশাপাশি গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের চতুর্দশ ও শীতকালীন অধিবেশনে গতকাল শনিবার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দিনটি পালন এবং স্বীকৃতি আদায়ের এ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।
এর আগে সোয়া ৬ ঘণ্টা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে স্পিকার প্রস্তাবটি গণভোটে দিলে টেবিল চাপড়িয়ে সব এমপিরা প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
শনিবার দুপুর ৩টা ১০ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হাওয়া সংসদের বৈঠকে প্রস্তাবটি প্রত্থাপন করেন ফেনি-১ আসনের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের এমপি শিরিন আখতার।
প্রস্তাবে তিনি উল্লেখ করেন ‘সংসদের অভিমত এই যে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যাকে স্মরণ করে ২৫শে মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করা হউক এবং আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হউক। ’
প্রস্তাবটি পাস হওয়ার আগে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘের ঘোষণায় ‘জেনোসাইড’-এর যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বাস্তবায়ন হয়েছে সেদিন বাঙালির উপর। তিনি প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণের জন্য সংসদের প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, স্বতন্ত্র সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকীসহ সরকারি দল ও বিরোধী দলের ৫৪জন সদস্য ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন।
এর আগে জাসদের এমপি শিরীন আখতার ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে টিক্কা খানের নেতৃত্বে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামের সামরিক অভিযানে সংগঠিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হিংস্রতা ও বর্বরতা চিত্র তুলে ধরে দিনটিকে (২৫ মার্চ) গণহত্যা দিবস ঘোষণা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতির জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রস্তাব আনেন।
গত ২ মার্চ সংসদের বৈঠকে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ঘোষণা করেছিলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা দিয়ে সংসদে আলোচনা হবে। এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। পরে আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দিনটির গুরুত্ব তুলে ধরে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের তাগিদ দেন।
আলোচনায় অংশ নেন, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, আলী আশরাফ, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, কর্ণেল (অব:) ফারুক খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, শাজাহান খান, নুরুজ্জামান আহমেদ, কর্নেল (অব) শওকত আলী, ডা. দীপু মনি, আবদুল মতিন খসরু, আসাদুজ্জামান খান কামাল, কামরুল ইসলাম, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, শাহরিয়ার আলম, তারানা হালিম, জুনাইদ আহমেদ পলক, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, কাজী ফিরোজ রশীদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী, আবদুল মান্নান, নজিবুল বশার মাইজভান্ডারী, মনিরুল ইসলাম মনি, বজলুল হক হারুন, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ফজলে হোসেন বাদশা, নুরুল ইসলাম সুজন, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, মইন উদ্দিন খান বাদল, সাগুফতা ইয়াসমিন, জিয়াউদ্দিন বাবলু, ফখরুল ইমাম, তাহজীব আলম সিদ্দিকী, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, কাজী রোজী, আব্দুল মতিন, নুরুল মজিদ হুমায়ুন, তাজুল ইসলাম, কামাল।