নজরুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি:
উচ্চ বিদ্যালয়, ট্রেড শাখা ও প্রাইমারী স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। এর মধ্যে ছাত্রী সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন সকাল ৯টায় চলে আসে বিদ্যালয়ে, দুপুরে টিফিনের সময় টিফিন আনতে বিদ্যালয়ের আশপাশের দোকানে যাতায়াত ও বিকেলে বাড়িতে ফেরার সময় অনেক ছাত্রীরাই বখাটের হাতে প্রতিনিয়ত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য, প্রেম নিবেদন, ছাত্রীদের মুখের সামনে সিগারেটের ধোয়া ছেড়ে দেওয়াসহ বাজে মন্তব্যের শিকার হচ্ছে কোমলমতি ছাত্রীরা।
ক্লাস চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির মধ্য অবৈধভাবে রাজনৈতিক সংগঠনের নামে ক্লাবে বখাটেদের দিনব্যাপী আড্ডা দিতে দেখা যায়। ছাত্রীদের ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদে ২বছর পূর্বে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকরা মানববন্ধন করেছিল। মানববন্ধন পরে প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহন করায় কিছুদিন বখাটের উৎপাত বন্ধ ছিল। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিকট বারবার অভিযোগ দিলেও বখাটেদের হাতে লাঞ্চিত হওয়ার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। ঘটনাটি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চন্ডিদাসগাঁতীতে সৈয়দ আকবর আলী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গন ঘুরে ও তথ্যানুসন্ধানসূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চন্ডিদাগাঁতী গ্রামের সাইফুল শেখ এর ছেলে সাব্বির শেখ (১৮), আবুল মন্ডলের ছেলে ফাহিম (১৭), নুর হোসেন এর ছেলে রিফাত শেখ (১৯), চেরাগ আলীর ছেলে সিয়াম (২০), শহিদ শেখ এর স্বপ্লিল (১৯), হান্নান এর ছেলে সাকিব (১৭) ও মোয়াজ্জেম এর ছেলে ইমরান (২০), রুহুলের পুত্র রাব্বি (১৬)সহ বহিরাগত কিছু যুবকেরা বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের যাওয়ার সময়, টিফিনের ও বিদ্যালয় থেকে আসার সময় রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে বিভিন্ন উত্যক্ত করে থাকে। উঠতি বয়সী ছেলেরা রাস্তায় বিভিন্ন পয়েন্টে দাড়িয়ে থেকে বিভিন্ন বাজে মন্তব্য করে থাকে। এছাড়াও মুখে সিগারেটের ধোয়া বের করে মেয়েদের দিকে ফিকে মারে।
আজ (৫ জুন) বুধবার বিদ্যালয়ে টিফিনের সময় গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের দক্ষিন গেটে একটি ভ্যানে ৪জন যুবক মেয়েদের উত্যাক্ত করছে। একটি দোকানে টিফিন নিতে আসা মাঠে একজন ছাত্রীকে চন্ডিদাসগাঁতী গ্রামের শহিদুল এর পুত্র সাগর (১৬) গলায় গামছা পড়ে উক্ত্যক্ত করছে। ছাত্রীটি উক্ত্যক্তের থেকে বাঁচতে সাগরকে এড়িয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষন পরে সাগর বিদ্যালয় মাঠে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ক্লাবে প্রবেশ করে অন্যন্য যুবকদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠতে দেখা যায়।
সুমাইয়া নামে ৮ম শ্রেনীতে পড়ুয়া বাবা রহমত আলী বলেন, বাজে ছেলেদের উত্যক্তের কারনে স্কুলে আসতে চায় না। কোন প্রতিবাদ করতে গেলে মারামারি বেঁধে যায়। তাই প্রতিবাদ করি না। মেয়েকে সাথে নিয়ে স্কুলে পৌছে দেয় এবং নিয়ে আসি।
সৈয়দ আকবর আলী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ওয়াদুদ বলেন, ইভটিজিংয়ের ঘটনা বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির মধ্য কোন ঘটনা ঘটে না। তবে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় মাঝে মধ্য রাস্তাঘাটে উক্ত্যক্তের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে ইউপি সদস্য রুহুল আমিন সজল বলেন, শিক্ষার্থীদের উত্যক্তের ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে আমার কাছে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন। উক্ত্যক্তকারীদের অভিভাবকদের বলার পরেও কোন কাজ হচ্ছে না। প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনোয়ার হোসেন বলেন, ছাত্রীদের উক্ত্যক্তের বিষয়ে সঠিক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।