নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে বলাৎকারের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে চাঁদার টাকা আদায় করতে গেলে কামরুজ্জামান বেল্টু নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে সাতগাড়ি মোড় থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার কামরুজ্জামান বেল্টু (২৫) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাড়াবাড়ীয়া গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কামরুজ্জামান বেল্টু সাতগাড়ি এলাকার এক কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ করার ভয় দেখান রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে। গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে রবিউল ইসলামের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। সংবাদ প্রকাশ হওয়ার ভয়ে বেল্টুকে সাতগাড়ি মোড়ে নিয়ে গিয়ে ৫ হাজার টাকা দেন রবিউল ইসলাম। ওই সময় ৫ হাজার টাকা নিলেও বাকি ২৫ হাজার টাকা গত শনিবার নেবেন বলে জানান বেল্টু। এরপর শনিবার রবিউল ইসলামকে ফোন দেন বেল্টু এবং বাকি ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। আবারও বেল্টু টাকা দাবি করলে গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর টাকা দেবেন বলে জানান রবিউল। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে মটরসাইকেলযোগে দাবিকৃত চাঁদার দ্বিতীয় কৃস্তি নিতে গেলে স্থানীয়রা বেল্টুকে আটক করেন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে শহর ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে আটক করে ফাঁড়িতে নেন। এ ঘটনায় সাতগাড়ি এলাকার দক্ষিণ গোরস্থানপাড়ার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে আটক কামরুজ্জামান বেল্টুকে আসামি করে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। মামলার ধারা ৩৮৫-৮৬। এ সময় আটক কামরুজ্জামান বেল্টুর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি অনটেস্ট মটরসাইকেল, একটি ভিডিও ক্যামেরাসহ নগদ ২ হাজার ৭০ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। চাঁদাবাজির অভিযোগে আজ তাঁকে আদালতে প্রেরণ করা হতে পারে বলে জানায় থানার পুলিশ।
রবিউল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর সাতগাড়ি তেলপাম্প মোড়ে তিনি একই তরিকার মুরিদদের নিয়ে জিকির করার সময় বেল্টু ওই স্থানে উপস্থিত হন। এ সময় লোকজন তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে স্থানীয় এক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন, রবিউল ইসলামের সঙ্গে তাঁর কথা আছে। এ সময় রবিউল নামাজ আদায়ের পর তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। নামজা আদায় শেষ হলে রবিউলকে বাইরে নিয়ে গিয়ে বেল্টু বলেন, সাতগাড়ি এলাকার এক কিশোরকে তিনি গত দেড় বছর ধরে বলাৎকার করছেন। এ ঘটনার সব তথ্য তাঁর ক্যামেরায় আছে। এ সময় বেল্টু আরও বলেন, ‘৩০ হাজার টাকা না দিলে পত্রিকায় আপনার নামে নিউজ ছাপা হবে। নিউজ ছাপা হলে আপনার মান-সম্মান চলে যাবে।’ এ ঘটনার পর মান-সম্মানের ভয়ে রবিউল তাঁকে সাতগাড়ি মোড়ে নিয়ে গিয়ে ৫ হাজার টাকা দেন। পরে গতকাল চাঁদার বাকি ২৫ হাজার টাকা আনতে গেলে স্থানীয়রা তাঁকে আটক করে পুলিশে দেন।
এ বিষয়ে শহর ফাঁড়ি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ওহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে সাতগাড়ি এলাকায় চাঁদবাজির অভিযোগে কামরুজ্জামান বেল্টুকে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয়রা।
আটক বেল্টুর সাংবাদিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য পত্রিকা অফিসে ফোন দিলে জানা যায়, কামরুজ্জামান বেল্টু ওই পত্রিকার সাংবাদিক নন।