সন্তানকে কতদিন মাতৃদুগ্ধ দেওয়া যায়

0
5
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করানো প্রতিটি মায়ের কর্তব্য। কারণ মহান আল্লাহ মায়ের দুধে শিশুর বেড়ে ওঠার সব উপাদান দিয়ে দিয়েছেন
যেমন- আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, রোগপ্রতিরোধকারী উপাদান, পানি, সহজপাচ্যকারী উপাদান ইত্যাদি সবই সুষমভাবে থাকে মাতৃদুগ্ধে। ফলে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া শিশু সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে বেড়ে ওঠে। পাশাপাশি তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও অনেক বেশি থাকে। এর ফলে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অপুষ্টিজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পায়।
শারীরির সুস্থতার পাশাপাশি শিশুর মানসিক বিকাশেও মায়ের দুধের ভূমিকা অনবদ্য। এ ছাড়া মায়ের সুস্থতা যেমন স্তন ক্যানসার, ওভারিয়ান ক্যানসার প্রতিরোধে সন্তানকে সঠিক ভাবে মায়ের দুধ পান করানোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিটি মায়ের উচিত, সন্তান জন্মলাভের পর থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাকে নিয়ম মাফিক দুধ পান করানো।
অনেকে আবার না জেনে কোরআনের নির্ধারিত সময় সীমা পার হয়ে যাওয়ার পরও সন্তানকে বুকের দুধ পান করান। অথচ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ সন্তান মাতৃদুগ্ধ পান করানোর নির্দিষ্ট একটি সীমারেখা নির্ধারণ করে দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মাতাগণ নিজেদের বাচ্চাদেরকে পূর্ণ দুবছর স্তন্যদান করবে, যদি দুধ খাওয়ার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়। (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৩৩)
তাফসিরবিদগণ বলেন, এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, সন্তানকে দুধ পান করানো ওয়াজিব এবং আরও বোঝা গেল যে, বিশেষ ওজর ছাড়া স্তন্যদান থেকে বিরত থাকার অবকাশ নেই।  (মা আরিফুল কুরআন; তাফসিরে মাযহারি; কুরতুবি; জামিউ আহকামিসসিগার : ১/১২৩
অনেক মা সন্তানকে ৩-৪ বছরও দুধ খাওয়ান। আবার অনেকে আড়াই বছর খাওয়ানো যায় মনে করে এ মেয়াদ পূর্ণ করেন। এটা ভুল। সন্তান অনূর্ধ্ব দুই বছর মায়ের বুকের দুধ খেতে পারবে। দুই বছরের বেশি বয়সী সন্তানকে দুধ পান করানো নাজায়েজ। দুই বছর দুধ পান করানোর বিষয়টি উল্লিখিত আয়াতে রয়েছে। এছাড়া আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘মায়ের দুধ পানের সময় দুই বছরই।’ (সুনানে দারাকুতনি ৪/১৭৪, তাফসিরে মাযহারি : ১/৩২৩, মাজমাউল আনহুর : ১/৫৫২, আত্তাসহিহ ওয়াত্তারজিহ ৩৩৫, ফাতহুল কাদির : ৩/৩০৭-৩০৯)
তাই প্রতিটি মায়ের দায়িত্ব সন্তানের দুবছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তাকে অন্যান্য খাবারে অভ্যস্ত করা। যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাকে মায়ের দুধ দেওয়া বন্ধ করা যায়।