নিউজ ডেস্ক:
বাতাসে ধুলো ও ক্ষতিকর পার্টিকেলের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় এখন ঘরে ঘরে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা। দেশে ৭০ থেকে ৮০ লাখ মানুষ এ রোগে ভুগছে।
কারও বংশগত, কেউ আবার আক্রান্ত হচ্ছেন দূষিত পরিবেশে অনিন্ত্রিত জীবন যাপনের ফলে। শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ বিশেষ করে শৈশবে ভাইরাস আক্রমণসহ নগরীর বায়ু দূষণ এর জন্য অন্যতম প্রধান কারণ। পশুর কাছে যাওয়ার পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে কীটনাশক ব্যবহার ও অন্যান্য জীবাণুও হাঁপানি রোগের কারণ। আর এই হাঁপানি তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রনে কার্যকর উপায় হিসেবে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে ইনহেলার। তবে অনেকেই ভুল উপায়ে ইনহেলার ব্যবহারের কারনে নানা সমস্যায় পড়েন।
এ ব্যাপারে চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যাজমা বা হাঁপানি হলো শ্বাসনালির দীর্ঘস্থায়ী ও প্রদাহজনিত একটি রোগ। হাঁপানি যেকোনো বয়সের নারী বা পুরুষের হতে পারে। প্রদাহজনিত কারণে শ্বাসনালির সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। ফলে ঘন ঘন কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, আওয়াজ, বুকে চাপ বা দম নিতে কষ্ট হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যদি সঠিকভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা না নেওয়া হয়, তাহলে এ রোগে অনেক সময় মৃত্যুও হতে পারে। সাধারণত হাঁপানি নিরাময়যোগ্য রোগ নয়, সচেতন জীবনযাপনই এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার অন্যতম উপায়। হাঁপানির ওষুধ ইনহেলারের মাধ্যমে রোগীর শ্বাসনালীতে গিয়ে শ্বাসকষ্ট কমিয়ে দেয়। সংকুচিত শ্বাসনালীকে প্রসারিত করে। তাই এখন পর্যন্ত হাঁপানির সর্বোত্তম চিকিৎসা হিসেবে ইনহেলারকেই বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বেশিরভাগ রোগীর এই রোগ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় এর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কারও কারও বংশগত কারণে বা পরিবেশগত কারণেও এ রোগ হতে পারে। কারও নিকটাত্মীয় যদি এতে আক্রান্ত থাকে বা কেউ যদি বিভিন্ন দ্রব্যের প্রতি অতিমাত্রায় অ্যালার্জিক হয় তাহলে তার হাঁপানি হতে পারে। এ ছাড়া ধুলোবালির মধ্যে থাকা মাইট নামের ক্ষুদ্র কীট, ফুলের পরাগরেণু থেকে; পশুপাখির পালক, ছত্রাক, মল্ট, ইস্ট, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সিগারেটের ধোঁয়ার মধ্যে যারা থাকে তাদের এ রোগ হতে পারে। কোনো কোনো ড্রাগ, যেমন বিটা ব্লকার, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হয়, এনএসএআইডি (ব্যথা নিরাময়কারী ওষুধ) এসপিরিন কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাঁপানির কারণ হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে হাঁপানী বা শ্বাসকষ্টের প্রথম চিকিৎসা হচ্ছে ইনহেলার। ইনহেলার শ্বাসকষ্ট লাঘবে খুব দ্রুত কাজ করে, যেখানে সেবনযোগ্য ট্যাবলেট বা বড়ি খেলে ২০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা সময় লাগে। তবে ইনহেলার ব্যবহারে যথোপযুক্ত ফল পাওয়া যাবে যদি এর ব্যবহার বিধি সঠিকভাবে জেনে নেয়া যায়। ছোট কোন ক্যানিস্টার বা কৌটায় সাধারণত ওষুধ থাকে। সব সময় ইনহেলার ব্যবহারের আগে তা ঝাঁকিয়ে নিলে ভাল। শ্বাস নেয়া এবং ক্যানেস্টারে চাপ দেয়া আগে পরে হলে ইনহেলার ব্যবহারের কোন ফল পাওয়া যাবে না। শ্বাস নিতে আরম্ভ করার সময় ক্যানেস্টার চাপ দিতে হবে। যাতে ওষুধ সরাসরি শ্বাসনালীতে পৌঁছায়। মুখের দেড় থেকে দুই ইঞ্চি সামনে ইনহেলার মাইথপিস রেখে শ্বাস গ্রহণ করলে ওষুধের অধিকাংশ পরিমাণ শ্বাসনালীতে যায়। শ্বাসের সঙ্গে ওষুধ টেনে নেবার পর ১০-২০ সেকেন্ডের মত শ্বাস বন্ধ করে রাখতে হবে। ইনহেলার একবার ব্যবহারের পর ৪ ঘণ্টার মধ্যে আবার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সাথে অন্য ওষুধ দিতে হবে। আরও ওষুধ অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। আর সকল ইনহেলার একই কাজ করে না। তাই কোন ইনহেলার আপনার প্রয়োজন সেটাও ভালো বলতে পারবেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সূত্র: ইন্টারনেট