মো:ফরিদ উদ্দিন, লামা: বান্দরবানের লামায় জমি বিরোধের জের ধরে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের নাটক সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ফারুকের স্ত্রী কোহিনুর বেগম বৃহস্পতিবার দুপুরে লামা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের কাছে আবদুল করিমগংদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, সাজানো ঘটনার ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে বিভ্রান্তির চেষ্টা করছে আবদুল করিমগং। সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনাও করেন কোহিনুর বেগম।
অভিযোগে জানা যায়, ফাইতং ইউনিয়নের ফাদুর ছড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে মো. ফারকের নামে ফাইতং মৌজায় ৫ একর দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর জমি আছে। দীর্ঘ বছর ধরে এ জমিতে বহু কায়িক শ্রম ও অর্থ ব্যয়ে ফলজ বনজ বাগান সৃজন এবং বসতঘর নির্মাণ করে স্বপরিবারে ভোগদখল করছেন । গত কয়েক বছর আগে পাশের জহুর আলীর ছেলে আবদুল করিম ওই জমি তার স্ত্রী ছফুরা খাতুনের দাবী করে বিভিন্ন সময় জবর দখলের পায়তারা শুরু করে। এক পর্যায়ে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই আবদুল করিম গংদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারী মামলা করেন মো. ফারুক। মামলার প্রেক্ষিতে গত ৫ আগস্ট উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করে আদালত। পরে ১০ সেপ্টেম্বর মো. ফারুক বাদী হয়ে তার জমিতে বিবাদীদের বিরুদ্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বান্দরবান জেলা বিজ্ঞ য্গ্নু জজ আদালতে মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক বিবাদীদেরকে ১০ দিনের মধ্যে জবাব দাখিলের নির্দেশ দেন। জবাব দাখিল না করে উল্টো গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আবদুল করিম, আলী হোসেন, নুরুল আমিন, সিরাজ মিয়া, সুলতান আহমদ, মো. হোসেন, জহুরা খাতুন ও জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সংঘবদ্ধ হয়ে জমি দখলের উদ্দেশ্যে ফারুকের বসতঘর ভাংচুর ও ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আবদুল করিম ও তার লোকজন নিজেরাই নিজেদের হাত পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা সাজিয়ে স্বজনদের দিয়ে ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে বিভ্রান্তির চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, ঘটনার পর এসব ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করে মো. ফারুকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও করেন আবদুল করিমগং। পরে এ ঘটনায় মো. ফারুককে চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া এলাকা থেকে আটক করে পুলিশে দেয় আবদুল করিমের স্বজনেরা।
ফারুকের স্ত্রী কোহিনুর বেগম বলেন, আবদুল করিমগং মিথ্যা নির্যাতনের নাটক সাজিয়ে আমাদেরকে ঘায়েলের চেষ্টা করছে মাত্র। এছাড়া এ ঘটনায় যে ১০জনকে বিবাদী করে থানায় মামলা করা হয়েছে; তার মধ্যে আমি, আমার স্বামীসহ পরিবারের ৫জন রয়েছেন। বাকীদের আমরা চিনিনা। তাদেরকে কেন বিবাদীকরা হয়েছে তাও বোধগম্য নয়। এদিকে অভিযোগ সত্য নয় দাবী করে আবদুল করিমের বরাত দিয়ে শ্যালক নুরুল আমিন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আবদুল করিম ও তার মেয়েসহ চারজনকে গাছের সাথে বেঁধে মারধর করেছেন ফারুকগং। এ ঘটনায় থানায় মামলাও করা হয়েছে।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে শুনেছি। তবে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনাটি সত্য কিনা বলা যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন বলেন, জমি নিয়ে ফারুক ও আবদুল করিমের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম।#
ক্যাপশন ঃ লামায় উন্নয়ন মেলা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন থোয়াইনু অং চৌধুরী।-পূর্বকোণ।