অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত তিন মাসে রিজার্ভে কোনোরকম হাত না দিয়েই বৈদেশিক ঋণের প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার শোধ করেছে বাংলাদেশ। আজ রোববার (১৭ নভেম্বর) সরকার গঠনের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করেছি, দেশের অর্থনীতি ছিল বিপর্যস্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। আশা কথা, এই রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন উন্নতির পথে।
ড. ইউনূস বলেন, জ্বালানি তেল আমদানিতে পুঞ্জিভূত বকেয়ার পরিমাণ ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার হতে কমিয়ে ১৬০ মিলিয়ন ডলারে আনতে পেরেছি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ইতোমধ্যে ঋণ ও অনুদান হিসেবে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা আমাদের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সচল করতে সক্ষম হবে।
নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ ভাষণে বলেন, ১০০ দিন আগে আর্থিক দিক থেকে আমরা যে লণ্ডভণ্ড অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম, সেটা এখন অতীত ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক ১০০ দিনে অর্থনীতি সবল অবস্থানে চলে এসেছে। এটা সম্পূর্ণ নিজস্ব নীতিমালা দিয়ে হয়েছে।
সুখবর দিয়ে তিনি আরও বলেন, এখনো আমাদের বন্ধুদের কাছ থেকে যে সাহায্যের আয়োজন হয়েছে, তা আসা শুরু করেনি। বন্ধু রাষ্ট্রগুলো যে, আমাদের বড় বড় অংকের সাহায্য নিয়ে আসছে তাই নয়, তাদের এই সাহায্য দ্রুততম সময়ে আসা শুরু করবে এই প্রতিশ্রুতিও আমাকে দিয়েছে। এই সাহায্য আসা শুরু করলে আমাদের অর্থনীতি অত্যন্ত মজবুত এবং আকর্ষণীয় অর্থনীতিতে পরিণত হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও নানা রকম বিনিয়োগে উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, সকল প্রকার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা আপনাদেরকে একটা মজবুত অর্থনীতি দিয়ে যাবো। ভবিষ্যতে চলার পথকে সহজগম্য করে যাবো, নাগরিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করে যাবো। বিপক্ষ শক্তি যত শক্তিশালীই হোক, নাশকতার যত রকমই উদ্ভট পরিকল্পনাই করুক, সব কিছু নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। এবার যে মুক্তি আমরা অর্জন করেছি তা আমাদের কাছ থেকে কেউ যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে, তার জন্য সর্বমুহূর্তে প্রস্তুত থাকুন।