জুবাইর হোসেন (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়)
দফায় দফায় আন্দোলন ওপেন ডিবেট করা হলেও হয়নি পোষ্য কোটার সমাধান। সেই সুত্রকে ধরে আবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) রক্ত সংহতি ও মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
২৩ ডিসেম্বর (সোমবার) বিকেল ৩ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে এ আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের স্লোগান গুলো ছিলো, বাপের কোটা বাতিল চাই, বাতিল বাতিল বাতিল চাই পোষ্যকোটা বাতিল চাই, দিয়েছি তো রক্ত আরও দেব রক্ত।
আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কামরুল সজীব বলেন,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন মাধ্যমে ডেকেছে আপনারা আসেননি।যদি কোনো যুক্তি তর্কে মনে হয় চলমান পোষ্য কোটা যৌক্তিক মনে হয় তাহলে আপনারা আসেন বসেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আপনাদের বার বার নিমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন কিন্ত আপনারা আসেননি । ঘরে বসে থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাননীয় ভিসি স্যার থেকে প্রো- ভিসি স্যার পর্যন্ত বার বার আপনারা লিখেছেন পোষ্য কোটা মূল্যহীন, পোষ্য কোটার প্রয়োজন নেই। আমরা চাই না পোষ্য কোটা চলুক ।তাহলে আপনারা কেন পোষ্য কোটাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং সমস্ত বাংলাদেশ থেকে কেন উচ্ছেদ করছেন না।কেন আপনারা এক্সিকিউটিভ বোর্ড দিয়ে এই পোষ্য কোটাকে কেন এই মুহূর্তেই বিলুপ্ত করছেন নি কিন্ত আপনারা সেটা করছেন না । আপনারা যা করছেন সেটা হচ্ছে আপনারা বিভিন্ন জায়গায় লেখার মাধ্যমে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। বোঝাতে চাচ্ছেন পক্ষে আছি কিন্ত এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি ।আপনারা যারা বলছেন আমরা পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে গিয়ে কিছুই করতে পারব না তাদেরকে বলছি পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে যারা রক্ত দিয়েছেন আপনাদের এই রক্তের দাম দিতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড থেকে সমগ্র বাংলাদেশকে আহ্বান করছি আপনারা রাজপথে আসেন। যদি এবারই পোষ্যকোটার সমাধান না হয় তবে এই প্রশাসনকে সরানোর জন্য সর্বোচ্চ সত্তা থাকবো আমরা
আন্দোলনে উপস্থিত অর্থনীতি বিভাগের আরএক শিক্ষার্থী বলেন, আবারো এই পোষ্যকোটা বাতিলের আন্দোলনের গেঞ্জি পরে মাঠে নামতে হবে এটা কখনো ভাবিনি, কিন্তু এই পোষ্য কোটার কারণে, এই বৈষম্যের কারণে আবারো বাসা থেকে এই গেঞ্জি নিয়ে এসে আবার পরতে হইছে। ১৪তারিখে আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে আমরণ কর্মসূচিতে বসেছি, সেই কর্মসূচিতে প্রায় দুই ঘন্টা পার হয়ে যাওয়ার পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য সহ সবাই আমাদের আস্বস্ত করেন যে খুব দ্রুত এই ব্যাপারে ফলাফল জানাবেন। কিন্তু তাদের থেকে কোনো ভালো ফলাফল আমরা পাইনি।
আন্দোলনে আর এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন ভবনের সামনে কয়েকজন অনশনে বসেছি। রাবির প্রশাসন মহোদয় আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে পোষ্য কোটা নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিবেন। দুঃখের সাথে জানাচ্ছি, এতদিন চলে গেল, মাননীয় উপাচার্য মহোদয় এই নিয়ে পর্যাপ্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টা নিয়ে গড়িমসি শুরু করেছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে সুস্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আগামীতে যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে, সেখানে যদি কোনো পোষ্য কোটা থাকে, তাহলে আমরা যেভাবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি, তখনও আমরা পিছুপা হবো না এবং প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করবো।
রক্ত সংহতিতে রক্ত দিয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিকুল ইসলাম।